তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : উজান থেকে ঢলের পানি ও স্থানীয় ভাবে বৃষ্টিপাতে চলনবিলের নদ-নদীতে পানি আসায় ব্যাপক হারে ডিম ওয়ালা মাছ দেখা দিয়েছে।

প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু মৎস্য শিকারীরা অবাধে ডিম ওয়ালা মাছ শিকারে নেমে পরেছে। ডিম ওয়ালা মাছ ধরা বন্ধ না করতে পারলে পরবর্তীতে চলনবিলে মাছের অভাব দেখা দেবার আশংকা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অভিজ্ঞমহল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলনবিল অধ্যূষিত তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন মাঠ দিয়ে বয়ে গেছে অসংখ্য ছোট বড় নদ-নদী। বিলের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বৈশাখ ও জ্যেষ্ঠ মাসে ডিম ছাড়ে। গত কয়েক দিয়ে চলনবিলে কালবৈশাখী ঝড় ও স্থানীয় ভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাতে এবং উজান থেকে ঢলের পানি ও নদীতে জোয়ার আসায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানির সাথে ব্যাপক হারে ডিম ওয়ালা বোয়াল, টেংড়া, পুটি, শিং, কৈ,শোল, টানি, মোয়া মশি,পাবদা, বাতাসী মাছ দেখা দিয়েছে।

গত কয়েক দিন ধরে চলনবিলের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ও সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল, মাকড়শোন, কাটাবাড়ি, কুশাবাড়ি, মাগুড়াবিনোদ, দক্ষিণ শ্যামপুন, হামকুড়িয়া এলাকার নদীতে বানা ও সুতিজাল দিয়ে ডিম ওয়ালা মাছ শিকার করছে অবাধে।

বিশেষ করে হাটিকুমরুল বনপাড়া মহাসড়কের ৮ ও ৯নং ব্রীজের নীচে এক শ্রেণীর অসাধূ মৎস্য শিকারীরা প্রতিদিন রাতে নদীতে বানা ও বন পুতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করে কুচ দিয়ে অবাধে ২ থেকে ৫কেজি ওজনের ডিম ওয়ালা বোয়াল মাছ শিকার করছে। তাছাড়া সুতিজাল দিয়ে ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরতে অবাধে। অসাধু মৎস্য শিকারীর হাত থেকে এখন ডিম ওয়ালা মাছ শিকার বন্ধ না করতে পারলে চলনবিলে ব্যাপক হারে মাছের অভাব দেখা দিবে বলে স্থানীয় লোকজন জানান।

এলাকাবাসি আরও জানান, প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা যদি এখন থেকে ডিম ওয়ালা মাছ ধরা বন্ধ না করতে পারে তাহলে মৎস্য ভান্ডার চলনবিল মাছের সময় অভাব দেখা দিবে। তারা যে কোন উপায়ে ডিম ওয়ালা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। উপজেলা মৎস্য অফিসার বরুন কুমার মন্ডল এ প্রসঙ্গে বলেন, কিছু অসাধু মৎস্য শিকারীরা নদীতে ডিম ওয়ালা মাছ ধরছে। বিষয়টি অনেকেই আমাকে আজকে জানিয়েছেন। কোন কোন জায়গায় এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ডিম ওয়ালা মাছ ধরতে তা চিহিৃত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক জানান, কোন ক্রমেই ডিম ওয়ালা মাছ ধরা যাবে না। যারা এ ধরনের মাছ শিকার করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

চলনবিলবাসীর দাবি যে কোন উপায়ে ডিম ওয়ালা মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে। অন্যাথ্যায় মাছের ভরা মৌসুমে চলনবিলে পিঠা পানির মাছের অভাব দেখা দিবে। চলনবিল হারাবে মাছের ঐতিহ্য।

(এমএমএইচ/এএস/এপ্রিল ২২, ২০১৫)