সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তিনমিনিট স্থায়ী ভূমিকম্পে জেলার চারটি পাকা অবকাঠামোতে ফাটল ধরেছে। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১০জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কাজীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, ভুমিকম্পে চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের গাড়াবের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলা ভবনের পাঁচটি স্থানে ফাটল ধরেছে। ভবনের মেঝে দেবে গেছে। সদ্য নির্মানাধীন শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫০ শয্যা হাসপাতালের তিন তলা ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফেটে গেছে। সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উল্লাপাড়া পৌর ভবন ও হাটখোলায় বনিক সমিতির ভবনে বড় ধরনের ফাটলের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে ভুমিকম্পে ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে উপজেলার গয়হাট্টা সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়, মার্চেন্ট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সহ জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ ও আহত হয়ে যায়। এদের মধ্যে উল্লাপাড়ার আর্জিনা ৭ম, রোজিনা ৯ম, আয়শা ৭ম, সুমি ৭ম, আখিঁ ৭ম, ফাতিমা ১০ম ও সুমাইয়া ১০ম শ্রেণীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় এদের মধ্যে তিনজনকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

উল্লাপাড়া মাচেন্টস্ পাইলট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মীর শহিদুল ইসলাম ও সানফ্লাওয়ার হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কল্যাণ ভৌমিক জানান, ভূমিকম্প শুরু হলে এ সময় স্কুল ভবন কাঁপতে থাকে শিক্ষার্থীরা ভয় ও আতঙ্কে চিৎকার করতে করতে দ্রত শ্রেণী কক্ষ থেকে মাঠে বেরিয়ে আসে। তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে আসার সময় শিক্ষার্থীরা আহত হয়। আহতদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভূমিকম্প শুরু হওয়ার পর জেলা ও পৌরশহরের রাস্তায় হাজার হাজার লোকজন বাসা ও বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কক্ষ থেকে বের হয়ে মাঠের মধ্যে শুয়ে পড়ে। মুসলমানেরা উচ্চ স্বরে দোয়া ও হিন্দুদের উলুধ্বনি দিতে শোনা যায়। সিরাজগঞ্জের মসিরা খাতুন, শাহজাদপুরের রামচন্দ্র সাহা বলেন, জীবনে এতবড় এবং দীর্ঘ স্থায়ী ভূমিকম্প কোনদিন দেখিনাই।

(এসএস/এসসি/এপ্রিল২৬,২০১৫)