স্টাফ রিপোর্টার : মার্ক জুকারবার্গ-ল্যারি পেজদের মতো বাংলাদেশের তরুণরাই ভবিষ্যতের ফেসবুক-গুগল বানাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

রবিবার সকালে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে ল্যাপটপ বিতরণ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে ল্যাপটপ তুলে দেন জয়।

এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ডের শিক্ষার্থী মার্ক জুকারবার্গ ১৯ বছর বয়সে ফেসবুক আবিষ্কার করেছিলেন। আজ তোমাদের হাতে ল্যাপটপ দিয়ে যাচ্ছি। আমার বিশ্বাস তোমাদের মধ্যে কেউ ভবিষ্যৎ ফেসবুক-গুগল আবিষ্কার করবে।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্যপ্রযুক্তি সচিব শ্যামসুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য প্রফেসর খালেদা একরাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস, এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফাইজুর রহমান প্রমুখ।

এক্সিম ব্যাংকের সহায়তায় ঢাবির ২০০, বুয়েটের ২০০ এবং শাবিপ্রবির ১০০ শিক্ষার্থী এ ল্যাপটপ পাচ্ছেন। রোববার তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই ২০০ শিক্ষার্থীর হাতে ল্যাপটপ তুলে দেওয়া হয়।

জয় বলেন, ছয় বছর আগে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। তখন অনেকে বলেছিলেন, কম্পিউটার কিনবে কীভাবে। আমি তখন বলেছিলাম, তাদের কম্পিউটার কিনতে হবে না, আমিই পৌঁছে দেবে। ইন্টারনেট সংযোগ আমিই দিবো। আজ আমি সেই কথা রাখতে পারছি। আমি শিক্ষার্থীদের হাতে ল্যাপটপ দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, এখন এমন কোনো ইউনিয়ন নেই যেখানেই কম্পিউটার নেই, ডিজিটাল ল্যাব নেই। আমরা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্রি ওয়াইফাই জোন করে দেবো। আমরা একটা আইটি ভিলেজ করবো। সরকারি-বেসরকারি ১১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জিবিপিএস স্পিডের ফ্রি ওয়াইফাই প্রদান করা হবে।

পাশাপাশি ভবিষ্যতে দেশে আইটি ইন্ডাস্ট্রি ও আইটি ফোর্স গঠনেরও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি উপদেষ্টা।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমাদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো অবকাঠামো উন্নয়ন। সেক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছি। সারাদেশে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত প্রায় সবগুলো অফিসকে ফাইবার অপটিক কেবল সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, সচিবালয়কে ফ্রি ওয়াইফাইয়ের আওতায় আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছি আমরা।

ড. আতিউর রহমান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তব সত্য। দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে যেন ল্যাপটপ পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও ব্যাংকগুলোকে একটা পদ্ধতি চালু করার আহ্বান জানান তিনি

স্বল্প সুদে শিক্ষার্থীদের ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পেলে শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপ কেনার জন্য চার শতাংশ হার সুদে ঋণ বিতরণ করা সম্ভব।

ব্যাংকিং খাতের সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে সিএসআর’র এক তৃতীংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর।

আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার নয়, সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে বলবো।

শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল মন-মানসিকতায় তৈরি হওয়ার তাগিদ দিয়ে ঢাবি উপাচার্য বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। এখন যোগাযোগের সময় ও দূরত্ব অনেক কমে গেছে। এজন্য বর্তমান সরকারের অবদান অনস্বীকার্য।

এছাড়া, শিক্ষার্থীদের মাঝে দুই হাজার ল্যাপটপ বিনামূল্যে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।

(ওএস/এএস/মে ০৩, ২০১৫)