মাদারীপুর প্রতিনিধি : একটি বেসরকারি সংস্থার কিস্তির টাকার জন্য মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের কাচারিকান্দি গ্রামের আলি খার স্ত্রী নাছিমা বেগমের বসত ঘর ভেঙে নেয়ার একদিন পরে প্রশাসনের উদ্যোগে ফেরত দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে চলছে ঘর নির্মাণের কাজ। আর শেষ আশ্রয় বসত ঘর ফেরত পেয়ে  অসহায় পরিবারটিতে ফিরে এসেছে আনন্দ।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২ মে নাছিমা বেগমের একমাত্র সম্বল বসতঘর বিক্রি করে ১৫ হাজার টাকা নেয় এনজিও আশা। এতে করে ঋণ শোধ হলেও আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে নাছিমা ও তার পরিবার। এনিয়ে ঘটনার পরের দিন বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হলে প্রশাসন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে তারা বিভিন্ন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।

কালকিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান শাহীন, ইউএনও মো. হেমায়েত উদ্দিন ও ওসি কৃপা সিন্দু বালার উদ্যোগে আশ্রয়হীন পরিবারটির বসতঘর ফেরত আনা হয়। তারা দাড়িয়ে থেকে পুনরায় ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে।

ভূক্তভোগী নাছিমা বেগম বলেন, মাদারীপুর ফাউন্ডেশনের নামের একটি সংস্থার মাধ্যমে ইতালি প্রবাসি জনি মিয়া ঘর নির্মাণের জন্য নগদ ১৭ হাজার টাকা দিয়েছে। এছাড়াও এই ঘটনার সংবাদ প্রকাশের পর আমার মেয়ে লিমার পড়াশুনার সব খরচ দিতে চেয়েছে এক্সিম ব্যাংক। সোমবার সকালে ব্যাংক থেকে লোক এসে আমাকে বলেছে লিমার মাস্টার্স পাস পর্যন্ত তারা পড়া লেখার ব্যয়ভার বহণ করবে। এবং আশার ঋণের ১৫ হাজার টাকা কালকিনির ওসি শোধ করবে বলেও জানিয়েছেন।

মেয়ে লিমা আক্তার বলেন, ঘর হারিয়ে নিজেকে আশ্রয়হীন ও অনিরাপদ মনে হয়েছিলো। কোথায় মাথা গুজবো, কি করবো, সমাজে কিভাবে মুখ দেখাবো নানা ভাবনায় পড়েছিলাম। এখন আমাদের ঘর আমরা ফিরে পেয়েছি। ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। আমার পড়াশুনার খরচও একটি ব্যাংক দিতে চেয়েছে। এখন আর আমাদের দুঃখ থাকবেনা। ঘর ফিরে পেয়ে এখন আর নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছে না।

কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ কৃপা সিন্দু বালা বলেন, আমি নিজ উদ্যোগে আশার ঋণের ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ করবো। তাছাড়া ঐ অসহায় মায়ের ঘর ফিরিয়ে এনে আমি নিজে দাড়িয়ে থেকে নতুন করে নির্মাণের কাজ শুরু করেছি।

(এএসএ/এএস/মে ০৪, ২০১৫)