নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খামার পাথুরিয়া খাদিজাতুল কুব্রা (রাঃ) মাদ্রাসায় মঙ্গলবার ২৫ জোড়া দম্পতির যৌতুকবিহীন গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনালের অর্থায়নে ও কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটির বাস্তবায়নে জাকজমকপূর্ণভাবে ওই গণবিয়েতে প্রত্যেক নবদম্পতিকে আর্থিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ১টি সেলাই মেশিন, ১টি ভ্যান-রিকসা, লেপ-তোষক, বিয়ের পোষাক ও সংসারের প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী থালাবাসন, ব্যবহারিক আসবাবপত্র, সোনার নাকফুল প্রভৃতি বিয়ের উপঢৌকন হিসেবে প্রদান করা হয়। যৌতুক বিহীন গণবিয়ের অনুষ্ঠানে বিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটির মহাপরিচালক ড. গাজী মো. জহিরুল ইসলাম, গুরুদাসপুর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও (সহকারী কমিশনার ভুমি) মোবারক পারভেজ, মাদরাসার মুহতামিম সিহাব উদ্দিন, শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি আহমেদ মাজেদ,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক মোল্লা, সিনিয়র সাংবাদিক নবীউর রহমান পিপলু,মাহফুজ আলম মুনি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বর-কনের স্বজন সহ কয়েকশ’নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

বিয়ের আসরে বসা মাদরাসার গাড়ি চালক আল আমিন জানান, তিনি এক সঙ্গে যৌতুক বিহীন গণবিয়ের আসরে শরীক হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। তার নববিবাহিত স্ত্রী শারমিন একজন এতিম। বাবা-মা বহু আগেই মারা গেছেন। মামার বাড়িতে বড় হয়েছে। একটি এতিম মেয়েকে বিয়ে করে যৌতুকের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে পারায় তিনি খুশী।

আয়োজক প্রতিষ্ঠান খামার পাথুরিয়া খাদিজাতুল কুব্রা (রাঃ) মাদরাসার মুহতামিম সিহাব উদ্দিন জানান, ইতিপূর্বে এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ৪ দফায় যৌতুকবিহীন ১৩৫টি গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বাল্য বিয়ে রোধ সহ যৌতুকের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা বাড়াতে এবং যৌতুকের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে গত কয়েক বছর ধরে এই গণবিয়ের আয়োজন করা হচ্ছে। মঙ্গলবার এই গণবিয়েতে স্থানীয় বেশ ক’জন কাজী ৮০ হাজার টাকা মোহরানায় ২৫ জোরা বর-কনের রেজিষ্টি বিয়ে পড়ান। বিয়ে শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন করানো হয়। পরে বর-কনেদের নিয়ে স্বজনরা বাড়ি ফিরে যায়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও (সহকারী কমিশনার ভুমি) মোবারক পারভেজ জানান, যৌতুক এবং বাল্য বিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটি অভিশাপ। যে প্রতিষ্ঠানটি এই মহতি উদ্যোগের মাধ্যমে অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করছেন,তা দেশের জন্য বিরল ঘটনা। জনসচেতনা সৃষ্টিতে এই উদ্যোগ গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখছে। একই সাথে দেশের সকল স্তরের মানুষ এধরনের উদ্যোগ নিলে সমাজে বাল্য বিয়ে ও যৌতুক প্রথার বিলুপ্ত ঘটবে।

(এমআর/এএস/মে ০৫, ২০১৫)