কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজার শহরে রাতের আধাঁরে সংবাদকর্মীকে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির দুই জন এ.টি.এস.আইয়ের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই সংবাদ প্রকাশের জের ধরে এ ধরনের ন্যাক্কাজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশী নির্যাতনের শিকার সংবাদকর্মী মইন উদ্দীন কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্থানীয় পত্রিকার জ্যৈষ্ঠ প্রতিবেদক ছাড়াও জাতীয় পত্রিকার কক্সবাজার সংবাদদাতা ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত আছেন।

জানা যায়, ১৪ মে দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটার সময় নিজ কর্মস্থল স্থানীয় পত্রিকার অফিস থেকে কাজ শেষে বাড়ী যাওয়ার জন্য প্রধান সড়কে রিক্সার অপেক্ষা করা অবস্থায় থানা পুলিশের ব্যবহৃত একটি ভ্যানে করে একদল পুলিশ তার সামনে এসে দাঁড়ায়। এসময় পুলিশ ভ্যান থেকে নেমে কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির এ.টি.এস.আই আকতার সংবাদকর্মীর শরীর তল্লাশীপূর্বক দূর্ব্যবহারের পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতন করতে থাকেন। এসময় সংবাদকর্মী মইন উদ্দীন তার পরিচয় তুলে ধরে পত্রিকার কাজ শেষ বাড়ি ফিরছেন বলে জানান পুলিশকে। এতে উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে কক্সবাজারের সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং সংবাদকর্মীকে পড়ালেখা কিছু করেছে কিনা জানতে চায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

প্রশ্নের জবাবে মইন উদ্দীন এলএল.বি (অনার্স) এর একজন নিয়মিত ছাত্র বলে উল্লেখ করলে আরো ক্ষিপ্ত হয় পুলিশ সদস্যরা। আর এসময় এ.টি.এস.আই দেলোয়ারসহ সিভিল পোশাক পরিহিত আরো কয়েকজন লোক যাদের দেখতে সন্ত্রাসী প্রকৃতির মনে হয় এরা এসে সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে সংবাদকর্মী মইন উদ্দীনকে শাসিয়ে দেয় যে, যদি ছিনতাইকারী বলে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দিই, তাহলে কিছু করতে পারবি। এক পর্যায়ে সংবাদকর্মীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন পুলিশের অসাধু এসব কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদকর্মী মইন উদ্দীন জানান, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার আর যাতে কোনো পূণরাবৃত্তি না হয় সেজন্য অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আর চাঁদা দাবি ও শারীরিক নির্যাতনের কারণে তিনি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান।

এদিকে সংবাদকর্মীকে লাঞ্ছিত ও শারীরিক নির্যাতনের প্রতিবাদে কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেলের নেতৃত্বে একদল সংবাদকর্মী জেলা পুলিশ সুপার আজাদ মিয়া’কে বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আর পুলিশ সুপার বিষয়টি আমলে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

(টিটি/অ/মে ১৫, ২০১৪)