পিরোজপুর প্রতিনিধি : ‘মা’ ছোট্ট একটি শব্দ।  একটি অক্ষর। একটি মধুর ডাক। এই ছোট্ট অক্ষরের মধ্যে লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সব মায়া মমতা আদর আহ্লাদ, প্রেম ভালবাসা অভাব অভিযোগ সহ সককিছু। ‘মা’ ছাড়া দুনিয়া অচল। ‘মা’ দিবস উপলক্ষ্যে পিরোজপুরের কাউখালী প্রতিবন্ধী স্কুলের উদ্যোগে রবিবার সকাল ১০ টায় প্রতিবন্দী স্কুল চত্বরে পনের মাকে সংবর্ধনার আয়োজন করেন পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার এলাকার মানুষের কাছে সাদামনের মানুষ হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত বিশিষ্ট সমাজসেবক পরোপকারী আ. লতিফ খসরু সুবিধা বঞ্চিত হতদরিদ্র পনের জন মাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এই পনের জন মায়ের মধ্যে তিন মা হয়েছে শতবর্ষী।

এসকল মায়েদের সংবর্ধিত করা হয় তারা হলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বামী সন্তান হারা আমরাজুড়ী ইউনিয়নের গন্ধর্ব্য গ্রামের রাজেন্দ্র নাথ রায়ের কন্যা বীর মুক্তিযোদ্ধা উর্মিলা রানী রায় (৯০)। উপজেলার কেউন্দিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের মা আমজেদুন নেছা (৮০), একই গ্রামের মৃত আউয়ালের স্ত্রী সাফিয়া বেগম (১০০) কেউন্দিয়া গ্রামের শুক্তুর খানের স্ত্রী ফাতিমা বেগম (১০০) আমরাজুড়ী আবাসন প্রকল্পে বসবাসকারী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী জাহিদের মা রেক্সেনা বেগম (৭০) চার বাক প্রতিবন্ধী সন্তানের মা মঞ্জিলা বেগম (৬০) দুই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তানজিলা ও আসমার মা সাহেরা বেগম (৭০) আমরাজুড়ী আবাসনে বসবাসকারী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শান্তার মা আমেনা বেগম (৫০) উপজেলার বাশুরী গ্রামের মৃত. দেরাগ আলী ফকিরের স্ত্রী শতবর্ষী মকিমন নেছা। উপজেলার দাশেরকাঠী গ্রামের মানিক সরদারের হতদরিদ্র স্ত্রী হালিমা বেগম (৭০), গন্ধর্ব্য গ্রামের মৃত নিবারণ চন্দ্র রায়ের হতদরিদ্র স্ত্রী বকুল বালা রায় (৭৫), কাউখালী সদরের মৃত. উমেশ সাধকের হতদরিদ্র স্ত্রী সুষমা সাধক, শহরের মৃত. মোদাচ্ছের আলীর স্ত্রী আমিরুন নেছা (৭৫) চিরাপাড়া গ্রামের মৃত. মনছুর আলী শেখ এর স্ত্রী শ্রমজীবী রহিমা বেগম (৬৫), রবিন দাসের স্ত্রী মঞ্জুরানী দাস (৬০), আউয়ালের স্ত্রী সাফিয়া বেগম (৮০), আ. খালেকের স্ত্রী কুলসুম (৭০)। সংবর্ধিত মায়েদেরকে মালা পরিয়ে সংবর্ধিত করা হয়, এবং মিষ্টি, দধি, ফল দিয়ে তাদেরকে আপ্যায়ন করা হয়। উপহার হিসেবে প্রত্যেকটি মাকে এক একটি শাড়ি দেওয়া হয়। প্রতিবন্ধি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সমাজ সেবক আ. খসরুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আমরাজুরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ লাল গুহ, কাউখালী মহিলা পরিষদ সভানেত্রী জাহানুর বেগম, কাউখালী উত্তর বাজার যুব কল্যাণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাকিব উদ্দীন পাবেল, ইউপি সদস্য নেপাল চন্দ্র দে, ক্ষুদে সন্তান তাহমিদ প্রমুখ।
সংবর্ধিত চার বাক প্রতিবন্ধী সন্তানের মা মঞ্জিলা বলেন, মোর শোয়ামি বোবা মোর চারডা মাইয়া পোলাও বোবা। মুই কোনদিন ওদের মুখে মা ডাক হোনতে পাই নাই। এইডা মোর বড় কষ্ট। কিন্তু খসরু মোরে মা দিবসে মা কইয়া ডাক দেছে হেতে মুই খুশি হইছি। হে অনেক মায়গো বোলাইয়া খাওয়াইছে মালা দেছে, একখানা কইরা শাড়িও দেছে এইতে মোরা খুব খুশি হইছি।
এ ব্যাপারে উদ্যোক্তা সাদামনের মানুষ আ. লতিফ খসরু বলেন, মায়েদের জন্য সবদিনই সমান, তবে এই দিনটি মায়েদের জন্য একটি বিশেষ দিন। আমার মা নেই। আমার যাকিছু অর্জন তার পিছনে মায়ের অবদান অনেক। আজকের এই মা দিবসে এসকল মায়ের মাঝে খুঁজে পেলাম আমার মাকে। আমি এ্ই মায়েদের সংবর্ধনা দিতে পেরে নিজেকে গর্বিতবোধ করছি। আমাদের যাদের মা বেঁচে আছেন। তাদের জন্য উৎসর্গ করি নিজেকে। তাদের প্রতি হই বেশি করে যত্মবান। আমাদের যাদের মা বেঁচে নেই। সেই মায়ের জন্য দোয়া করি।
কাউখালীর বিশিষ্ট সংস্কৃতিকজন সুব্রত রায় বলেন আজকের এই দিনটি আমাদের সকলের মায়ের জন্য একটি বিশেষ দিন। খসরু ভাই যে উদ্যোগটি গ্রহণ করেছেন তা আমাদের সকলের জন্য অনুকরণীয়।

(এসএ/পিবি/মে ১০,২০১৫)