স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্বে দিন দিন চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বেড়েই চলছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সম্ভাবনাময় গার্মেন্টসের পরই হবে এই শিল্পের স্থান।

তাই চামড়া শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) একটি জাতীয় সেমিনারের আয়োজন করতে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বোস এসব কথা বলেন।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর কনফারেন্স রুমে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শুভাশীষ বলেন, “হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্পের দূষণের ডকুমেন্টারি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো আমাদের চামড়া ও এর উপাদান আর ব্যবহার করছে না। কিন্তু এত কিছুর পরও আমাদের আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের হাতে বোনা ও হাতে প্রিন্ট করা পরিবেশবান্ধব চামড়াজাত সামগ্রী উৎপাদনের জন্য পুরস্কৃত হয়েছে।”

সেমিনারের মূল প্রতিপাদ্য সম্পর্কে শুভাশীষ বলেন, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে আমাদের সক্ষমতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হবে ওই সেমিনারে। এছাড়া এ খাতের উন্নয়নে সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ এবং চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি উন্নয়ন পরিকল্পনাও চাওয়া হবে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের যৌথ আয়োজনে রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হবে।

চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে শুভাশীষ বলেন, দেশে ২০১২-১৩ অর্থবছরে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় করেছে ৩৯৯.৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে এ খাতে আমাদের রপ্তানি আয় ৪২৩.০৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩.৯০ শতাংশ বেশি। ২০১২-১৩ অর্থবছর ও চলতি (২০১৩-১৪) অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ও পাদুকা সামগ্রীর রপ্তানি আয় যথাক্রমে ৩০৫.১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ৩০৬.২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। উল্লেখিত সময়ে অন্যান্য চামড়াজাত সামগ্রীর রপ্তানি আয় যথাক্রমে ১৬১.৬২ এবং ১৯৭.৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ।

এ সময় আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহি বলেন, চামড়া শিল্প বাঁচলে এই শিল্পের সাথে জড়িত ১০ লাখ মানুষ বাঁচবে।

তিনি আরও বলেন, “প্রায় ১০ বছর ধরে আমরা ইকোলজিক্যাল চামড়াজাত পণ্য তৈরি করে আসছি। আমাদের তৈরি এসব পণ্যে মানব দেহে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না এমন ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়।”

তিনি বলেন, “আমরা চাই দেশের অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিজগুলো আমাদেরকে অনুসরণ করুক। দূষণ বন্ধ করা না গেলেও কিভাবে কমিয়ে আনা যায় তা নিয়ে পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে।”

উল্লেখ্য, বর্তমানে চামড়া শিল্পে ২২০টি ট্যানারি, চামড়াজাত পণ্যসামগ্রী উৎপাদনে ৩৫০টি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং ১১০টি মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প জড়িত।

(ওএস/এস/মে ১৫, ২০১৪)