স্টাফ রির্পোটার : নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে র‌্যাব-১১ থেকে প্রত্যাহারের পর সেনা ও নৌ-বাহিনী থেকে চাকরি হারানো সেই তিন সেনা কর্মকর্তা শুক্রবার যে কোনো সময়ে গ্রেফতার হতে পারেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জে ৭ হত্যার ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ড. খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বলেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের চিঠি আমরা হাতে পেয়েছি। অপহরণের পর ৭ জনকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত সেনা বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নৌ-বাহিনীর সাবেক লে. কমান্ডার এম.এম রানাকে গ্রেফতারে আমাদের কোন বাধা নেই। আজই ভালো কোনো খবর আপনারা পেতে পারেন।
শুধু গ্রেফতারই নয়, ভালো আরো অনেক খবর পাওয়া যাবে বলেও দাবি করেন পুলিশ সুপার।
‘ক্যান্টনমেন্টের ভেতর থেকেই কি তাদের গ্রেফতার করা হবে’ এমন প্রশ্নে মুহিদ উদ্দিন বলেন, সামান্য সময় অপেক্ষা করুন, দেখতে পাবেন। আগাম কিছু বলা সম্ভব নয়। তাছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের চিঠি নিয়ে আমরা কিছু সময়ের মধ্যেই বৈঠক করব। তারপরই আমাদের পরবর্তী কাজে নেমে পড়ব।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ করা হয়। পরে নারায়ণগঞ্জের শীতালক্ষ্যা নদীতে ৩০ এপ্রিল অপহৃত ৭ জনের মধ্যে ৬ জনের এবং ১ মে একজনের লাশ ভেসে ওঠে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনায় র‌্যাব-১১’র বিরুদ্ধে অপহৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলে বলা হয়- ‘র‌্যাব-১১’র সিও লে. কর্নেল তারেক সাঈদসহ আরো কয়েকজনে মিলে নুর হোসেনের কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা নিয়ে এ ৭ জনকে হত্যা করেছে।’
অপহরণ করে হত্যার এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ স্পষ্ট হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৬ মে লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেনকে সেনাবাহিনী থেকে এবং নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এম.এম রানাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। গত ১১ মে হাইকোর্ট তাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। চাকরি হারানো এ তিনজনই এখন অবসরকালীন ছুটিতে রয়েছেন।
নিহত নজরুল ইসলাম নাসিক প্যানেল মেয়র ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন। নিহত অন্যরা হচ্ছেন- অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার, তার গাড়ি চালক জাহাঙ্গীর, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠনের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ কর্মী মনিরুজ্জামান স্বপন, লিটন ও গাড়ি চালক ইব্রাহিম।
(ওএস/এএস/মে ১৬, ২০১৪)