গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)প্রতিনিধি:এক বছর দশ মাস ধরে মেয়েটিকে দেখিনা। ওর অবস্থাও কি কল্পনার মতো? শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত বাবা নিজাম উদ্দিনের আর্তনাদ, আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দাও। মেয়েটিকে মৃত্যুকূপ থেকে উদ্ধার করুন। সোমবার (১৮ মে) এভাবে বিলাপ করছিল সেই সেনা কর্মকর্তার বাসার আরেক গৃহপরিচারিকা মাকসুদার বাবা। মেয়েকে উদ্ধারের জন্য মাকসুদার বাবা সেই সেনা কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা করেছে।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের বাঢ়া গ্রামের নিজাম উদ্দিন জানান, তার মেয়ে মাকসুদা ৫ম শ্রেণিতে পড়ার সময় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার তারা মিয়ার মাধ্যমে লেঃ কর্ণেল ফেরদৌস-উর-রহমানের বাসায় গৃহপরিচারিকা কাজে দেন। তিনি নিজেই ঢাকা সেনানিবাসে গিয়ে এ কর্মকর্তার হাতে মেয়েটি তুলে দিয়েছিলেন। তবে তাকে বাসায় যেতে দেওয়া হয়নি। ওই কর্মকর্তা গত বছর ২৩হাজার টাকা দেন। ১০মাস ধরেই মেয়েটিকে ফিরে দেওয়া বা দেখার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও সেনা কর্মকর্তা রাজি হননি।

গত ৮মে ওই সেনা কর্মকর্তার ঢাকা সেনানিবাসের ৯/বি স্বর্ণলতা বাসা থেকে সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে মুক্তি পায় পাশের গ্রাম বড়ইকান্দার কল্পনা। অর্ধমৃত কল্পনাকে দেখে মাকসুদার বাবা নিজাম উদ্দিন ও মাতা ছালেমা খাতুন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ৪ সন্তানের মাঝে ওই ছিল ৩য়। মেয়েকে পাওয়ার আশায় যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হন। অবশেষে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ময়মনসিংহ জেলা শাখার সহযোগিতায় মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য মোঃ নিজাম উদ্দিন বাদি মামলা করেন। এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবি নজরুল ইসলাম চুন্নু জানান, মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চার্জওয়ারেন্ট দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত। মাকসুদা সুস্থ্য-ভালো আছে স্বীকার করে সেনা কর্মকর্তা ফেরদৌস-উর-রহমান সাংবাদিকদের জানান, মেয়েটিকে সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট বুঝিয়া দেয়া হয়েছে।

(এসআইএম/এসসি/মে১৯,২০১৫)