রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি  : ঢাকার মিরপুরের সাবেক সেনা কর্মকর্তার বাসার টয়লেটে পড়ে নিহত গৃহকর্মী আঁখির (১৪) মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না বলে ডাক্তারের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের ময়তদন্তকারি (আরএমও) ডা. আনোয়ার হোসেনের রিপোর্টের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

আঁখি রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের দিনমজুর আলমগীর হালদারের মেয়ে। আঁখি প্রায় দেড় বছর ধরে ঢাকার মিপুরের সাবেক সেনা কর্মকর্তার তৌফিকুর রহমানের ৩৯/৯/এ সেনপাড়া, মিরপুর-১০, এর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো। তবে আঁখির মৃত্যুর ঘটনার তার পরিবার দাবি করে আসছিলেন তাকে পিটিয়ে ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় একপর্যায় সাবেক সেনা কর্মকর্তার চাপ উপেক্ষা করে বাধ্য হয়ে আঁখির বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরি করে ময়নাতদন্ত করান।
নিহত কিশোরীর বাবা আলমগীর হাওলাদার জানান, বাসায় কাজ করা অবস্থায় ২বার বাড়িতে বেড়াতে আসে। বিভিন্ন সময় মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাকে দেখা করতে দিতেন না মেজরসহ পরিবারের লোকজন। মেজরের ক্ষমতার কাছে হার মেনে মেয়ের বিচার আল্লাহর কাছে ছেড়ে দিয়েছি। ময়নাদন্ততে হত্যার রিপোর্ট আসলে ওই মেজরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হবে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ময়নাতদন্তে আঁখির শরীরে বিভিন্ন অংশ আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত করে দেখা যায় তার মৃত্যু অস্বাভাবিক হয়েছে। তাছাড়াও সুরতহাল রিপোর্টেও আঘাতের চিহ্ন উল্লেখ্য করা ছিল।
রায়পুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন ভূঁইয়া জানান, গৃহকর্মী আঁখির মৃত্যুর ঘটনার ময়নাদন্তের কোনো রির্পোট এখনও পুলিশের হাতে পৌঁছেনি।
প্রসঙ্গত, ঢাকার মিপুরের সাবেক সেনা কর্মকর্তার বাসায় কাজের বিনিময়ে পেটভরে খাবার, নতুন জামা-কাপড় ও মাসে কিছু টাকাও পাওয়া স্বপ্নে দিনমজুর আলমগীরের মেয়ে আখিঁকে বুঝিয়ে নিয়ে যায়। পরে আঁখি ওই বাসায় দেড় বছর ধরে গৃহকর্মীর কাজ করে। গত ১১ মে দুপুরে ওই কর্মকর্তার বাসার টয়লেটে পড়ে মারা যায় বলে দাবি করেন ওই কর্মকর্তা। এ ঘটনার পর রাত ২টায় দিকে সাবেক সেনা কর্মকর্তার ছোট ভাই সবুজ একজন অ্যাডভোকেটকে নিয়ে নিহত কিশোরীর লাশ তার গ্রামের বাড়ি চরবংশী নিয়ে রেখে চলে যায়। মৃত আঁখির শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখে মঙ্গলবার (১২ মে) মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে রায়পুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বিকেলে হাজিমারা ফাঁড়ি থানার ইনচার্জ এসআই সিরাজ সুরতহাল প্রতিবেদনের পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।

(পিকেএস/পিবি/মে ১৯,২০১৫)