ঝালকাঠি প্রতিনিধি : গুম-এর অভিযোগে মামলা দিয়ে ৯টি পরিবারকে হয়রানি ও প্রভাবশালী মহলকে ৯ বিঘা সম্পত্তি দখল করিয়ে দেয়ার প্রায় দেড় যুগ পর কথিত অপহরণ মামলার ভিকটিম মনমোথন ব্যাপারী (৫৫) কে ঝালকাঠি পুলিশ আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করে।

সোমবার সকালে মষ্মথকে অপহরণের কথিত অভিযোগে হয়রানি হওয়া আপন চাচা ডুমরীয়া গ্রামের সুধির ব্যপারীর বাড়ীতে ফিরে এলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হওয়ায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কীর্তিপাশা ক্যাম্পের পুলিশ তাকে আটক করে।

সন্ধ্যায় ঝালকাঠি থানায় সোপর্দ করলে গুম মামলায় হয়রানির শিকার হওয়া পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তাকে ১৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে।

কথিত অপহরণ মামলার ভিকটিম মষ্মথ ব্যাপারী জানায়, সে বাড়ী থেকে কাজে বের হলে ৪/৫ জন লোক তাকে আটক করে বেঁধে নৌকায় তোলে ও পরে গাড়ীতে তুলে বেনাপোল দিয়ে ভারত পাঠিয়ে দেয়। সেখানে এক বছর থাকার পর সে ফিরে এসে সাতক্ষীরার বিভিন্ন স্থানে কাজকর্ম করে সেখানেই বসবাস করে আসছে।

সেখানে স্ত্রী কানন বালাকে খবর দিয়ে নিলে স্ত্রী তাকে বলে, তোমার নিখোঁজের ঘটনায় স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তির চাপের মুখে আমি গুম মামলা দায়ের করেছি। এখন তুমি বাড়ি ফিরে আসলে তারা তোমাকে মেরে ফেলবে এবং তারা যদি কিছু নাও করে প্রভাবশালী ঐ ব্যক্তিরা তোমাকে মেরে ফেলবে।

এই ভয়ে সে এতদিন বাড়ি না আসলেও এখন জীবনের শেষ প্রান্তে এসে রক্তের আত্মীয় স্বজনের হাতে শেষ যাত্রা সম্পন্ন হওয়ার আশায় ফিরে এসেছে। সে তার গুম নাটক ও মামলা দায়েরের জন্য স্ত্রী ও সেই প্রভাবশালীকে দায়ী করেন।

এ সময় কীর্তিপাশা পুলিশ ক্যাম্পে উপস্থিত কথিত গুম মামলার প্রধান আসামী ও জেল-জরিমানা ও হয়রানির শিকার পরিমল ব্যাপারী জানায়, তাদের ৯ বিঘা জমি আত্মসাতের জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি মষ্মথকে সরিয়ে দিয়ে তার স্ত্রীকে বাদি করে আমার ৩ ভাই, চাচা সুধির ব্যাপারীর ৩ ছেলে ও আরো ৩ জন সহ মোট ৯ জনকে জেল-জরিমানাসহ সর্বশান্ত করেছে।

তাছাড়া ৯ বিঘা জমিও উক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি আজ পর্যন্ত জবরদস্তি দখল করে রেখেছে। তাই আমরা আমাদের এতাগুলো পরিবারকে হয়রানিকারী বিরুদ্ধে আইনগত প্রতিকার ও আমার পৈত্রিক সম্পত্তি ফেরৎ পাওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানা পুলিশ জানায়, এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে ১৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এএম/পিএস/মে ১৯, ২০১৫)