ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এম এ হান্নানসহ তিন জনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের জ্যুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমানের স্ত্রী ত্রিশালের বৈলর মুন্সিপাড়া গ্রামের রহিমা খাতুন বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। পরে সিনিয়র জ্যুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১নং আমলী আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আহসান হাবিব আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন আইন ১৯৭৩ সালের ৩(২) ধারায় বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণের নির্দেশ দেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন- ময়মনসিংহ শহরের ৩নং কলেজ রোড গোলকিবাড়ির মো. ফখরুজ্জামান (৬৪) ও গলগন্ডা এলাকার মৃত ফয়জুর রহমানের ছেলে গোলাম রব্বানী (৬৮)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ময়মনসিংহ জেলা শান্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান, মো. ফখরুজ্জামান ও গোলাম রব্বানী আলবদর বাহিনীর সশস্ত্র সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ৯ আগষ্ট বিকেলে ত্রিশালের বৈলর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমানকে গৌরীপুরের ভাংনামারি চর থেকে ধরে আনেন। পরে তাকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রহ্ম‏পুত্র নদের তীরে একটি টর্চার সেলে প্রকাশ্য দিবালোকে দু’চোখ উপড়ে ফেলে ডান হাত ভেঙ্গে দিয়ে এম এ হান্নান নিজে গুলি করে হত্যা করেন এবং লাশ ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে দেন। এরপর আসামিরা তাদের বাড়ীঘর লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

মামলায় বাদী রহিমা খাতুন অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এম এ হান্নানের শহরের নতুনবাজার বাসা ও থানার ঘাট জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে টর্চার সেল তৈরী করে অসংখ্য নিরীহ নারী-পুরুষকে নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসিয়ে দেন।

দীর্ঘদিন পর মামলা করার বিষয়ে বাদী রহিমা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, এতোদিন প্রাণভয়ে স্বামীর বিচার চাননি। কিন্তু এখন গণতান্ত্রিক সরকার বলে তিনি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন ।


(টিবি/এসসি/মে২০১৫)