নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চরম হতাশা আর আতঙ্কে দিন কাঁটছে গৃহবধূ ববিতার। ঠিকমতো খাবার খেতে পারছে না। খাবার খেলেও বেশির ভাগ সময় বমি হয়ে যাচ্ছে।  স্বাভাবিকভাবে হাঁটতেও পারছে না। তিনবেলা খাবারের পরিবর্তে স্যালাইনের ওপরই বেশি নির্ভর হতে হচ্ছে।

দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ববিতা বলেন, ‘আমার শরীরে যে নির্যাতন করা হয়েছে, তাতে আর স্বস্তি কোথায়? তবে বাড়ি থেকে হাসপাতালে নিরাপদ বোধ করছি।’ এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শাহ্ ফজল এলাহী জানান, নিয়মিত ববিতার চিকিৎসা চলছে। আগের থেকে তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। আরো উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তা করা হবে। এদিকে ববিতার চাচাশ্বশুর কালাম শেখের গত ১৭ মে তিন দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম জানান, কালাম শেখ ববিতাকে গাছে বাঁধার কথা স্বীকার করলেও তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেননি। কে বা কারা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত, সে ব্যাপারেও মুখ খোলেননি।
এ ছাড়া ববিতার স্বামী শফিকুল শেখ, ভাশুর আবুল হাসান শেখ ও প্রতিবেশী নান্নু মোল্যার তিন দিনের রিমান্ড আগামী ২৪ মে থেকে শুরু হচ্ছে। গত রোববার দুপুরে লোহাগড়া আমলি আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলামের আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফর জানান, গৃহবধূ ববিতা নির্যাতন মামলায় এ পর্যন্ত সব আসামি (সাতজন) গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে হিরু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল সকালে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের বিএ (ডিগ্রি) শ্রেণির শিক্ষার্থী গৃহবধূ ববিতা খানমের (২০) শ্বশুরবাড়ির লোকজন নড়াইলের শালবরাত গ্রামে ববিতাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে তার ওপর বেধড়ক লাঠিপেটা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ববিতার স্বামী শফিকুল শেখ, শ্বশুর ছালাম শেখ, শাশুড়িসহ সাতজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়।
(টিএআর/পিবি/মে ২১,২০১৫)