অবিশ্রান্ত

 

সময় মাঝরাতের দাগ ছুঁয়ে পার হয়ে গেছে
হাইওয়ের ওপর তীব্র গতি
আলো পিছলে যায় রাস্তার পিচে
দুপাশে অন্ধকারের নিচে
ফসলী জমি,নাকি আগাছা জংগল
নাকি ঘুমন্ত লোকালয়,
বোঝা যায় না।

যেন রাতের ছাউনির তলায়
থমকে আছে সময়...
অনেকটা অন্ধকারের পর
একটা দুটো হটেল বা পানশালা,
অতিরিক্ত আলো আর বিরক্তিকর রঙে
বেমানান, খাপছাড়া।
আদর জরানো ঘুম চোখ
ভুরু কুঁচকে তাকায়
হারিয়ে যাক গন্তব্য
চলতে চলতে পার হয়ে যাক মাধ্যাকর্ষণ
টপকে যাই পৃথিবীর শেষ সীমা
আরও দীর্ঘস্থায়ী হোক
এই রাত
এই পথ
এই গতি...



পরিণাম


যেদিন তুমি বুঝিয়ে দিলে
কাকে বলে সকাল
সেদিন বুঝলাম
আমার চারপাশের রাত্রি
কতটা গভীর।
অন্ধের মত মড়া জোনাকি খুঁজি
আমারো একটা সকাল চাই
তোমার সহানুভুতি সেই রাতের গায়ে
অন্ধকার দিয়ে লিখে দিল
আলোর ঠিকানা
আমি পুরোপুরি অন্ধ হলাম!

ফসল


ঝড় ওঠে
ছড়ায় যন্ত্রণা
নোনা জল আর হৃৎপিন্ড নিংড়ান রক্তের
উর্বরতায়য় অংকুরিত হয় বীজ
কাল যাপনে গাঢ় সবুজ চেতনা,
ফসল কাঁপিয়ে হাহাকার করে
অবাধ্য বাতাস
রাতের শিতল নির্জনতায়য়
বিষাক্ত ফুল ফোটে!




আগুন জ্বালো


গুমঘরের হুমকিতে
কাঁপতে কাঁপতে নিভে গেল মোমবাতি।

কয়েকশো বছরের
কয়েক লক্ষ রাত জমা অন্ধকার
এই বন্ধ ঘরে,
অভিলাষের লাশ মাতে
হিংস্র উল্লাসে,
ইচ্ছেডানা থেকে টেনে টেনে ছেঁড়া
পালকের অট্টহাসি।
অন্ধকারের গর্ভ থেকে জন্মানো
কালো কালো লিকলিকে ছানাগুলো
গোগ্রাসে গিলে নিয়েছে
ঘুলঘুলির ছেঁড়াখোঁড়া সূর্যকে।

অতি সন্তর্পণে, গোপনে আসা
গুঁড়ো গুঁড়ো হাওয়া,
পাক খেতে খেতে মুখ থুবড়ে পড়ে।

মোমবাতি নয়
মশাল জ্বালো
লক্ষ লক্ষ মশাল...

ঘুণ পোকার বাসা


যখন রাত হয়
ঠিক রাত নয়,
ভোর রাত বা শেষ রাত,
সবাই যখন স্বপ্নের শেষ অধ্যায় নিয়ে
ঘুমের ভেতর ব্যস্ত থাকে
আমি তখন মশাল নিয়ে,
মাথার কোষে কোষে ঘুম পোকা খুঁজি,
যে ঘুণ পোকাগুলো,
আমার জীবন্ত ভাবনাগুলোকে
রাত ভর কুরে কুরে খায়।

দিনের আলোয় খাতার ওপর
জড়ো করি নিজেকে
দেখি বেশ কিছু শব্দ
খুবলে খুবলে খেয়ে গেছে ঘুণ পোকা,
তখন কিছু প্রশ্নচিহ্ন দিয়ে
নিপুন ভাবে ভরাট করার চেষ্টা করি।

কয়েকশো প্রজন্ম ধরে
নিশাচরগুলো
বাসা বেঁধেছে আমার সংস্কারে!



(এসসি/এসসি/মে২৩,২০১৫)