স্টাফ রিপোর্টার : সহজ শর্তে বিদেশি ব্যাংক বা দাতাসংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে আসতে না পারলে তা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম।

শুক্রবার রাতে রাজধানীর দিলকুশায় বাংলাদেশ চেম্বার ভবনে মাছরাঙ্গা টেলিভিশন আয়োজিত ‘বাজেট ২০১৪-১৫, আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

এ সময় তিনি বলেন, গত কয়েক বছর যাবৎ বিদেশি অর্থায়নের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। আর বড় বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বিদেশি অর্থায়ন কমে যাওয়ায় উচ্চহারে দেশির ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে সরকারকে। যার ফলে দেশের মূল্যস্ফীতি ক্রমাগত হারে বাড়ছে। আর এর ফলে কারও সম্পদের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে আবার কারও সম্পদের পরিমাণ কমছে। তাই বাজেটে অবশ্যই বৈদেশিক অর্থায়নের বিষয়ে জোড় দিতে হবে।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদের বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে পারলে এবারের বাজেটের পর বিনিয়োগ বাড়বে। বাজেটের আকার কোনো বিষয় নয়। অর্থনৈতিক জোন তৈরি করে সঠিকভাবে কাজ করতে পারলে তা ব্যাবসা ও বিনিয়োগবান্ধব হবে।

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দিন দিন সরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে। কিন্তু ব্যক্তিখাত বিনিয়োগ কমে আসছে। দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় বড় বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হওয়ায় ব্যক্তিখাত বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকীর আলোকে প্রতি বছর ১ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি থাকার কথা ছিল কিন্তু গত কয়েক বছর জিডিপি একই স্থানেই রয়েছে। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের আশপাশেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিখাত বিনিয়োগ ২৪ শতাংশ হওয়ার কথা থাকলেও তা গত দশ বছর ধরে ১৮ শতাংশে থেকেছে। আর বর্তমানে বেসরকারি বিনিয়োগের হার একেবারেই কমে গেছে। তাই বিনিয়োগ বাড়াতে আলাদা অর্থনৈতিক জোন গঠনও আস্থাশীল পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

তিনি বলেন, জাতীয় বাজেটে ধারবাহিকভাবে বিদেশি অর্থায়ন কমছে। বর্তমানে ৯৪ শতাংশ নিজস্ব অর্থায়ন হচ্ছে। বিদেশি অর্থায়ন কমিয়ে দেশিয় উচ্চমাত্রায় ব্যাংক ঋণ উন্নয়ন কমিয়েছে। তাই সরকারকে কম সুদে বিদেশি ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে মতামত দিতে গিয়ে বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হাসান বলেন, বিদেশি অর্থায়ন পেতে চলমান প্রকল্পগুলোকে বাস্তবায়নের গতি দেখাতে হবে। বড় বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন না হলে বিশ্বব্যাংক বা অন্যান্য জায়গা থেকে অর্থায়ন আসবে না।

আ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. মনজুর এ এলাহী বলেন, বড় বড় প্রকল্পগুলোতে নিজস্ব বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও এগিয়ে আসবে। আমাদের দেশে বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো জমি। তাই বাজেট বিনিয়োগবান্ধব হলে এ সমস্যাগুলো আর থাকবে না।

(ওএস/এস/মে ১৬, ২০১৪)