বরিশাল প্রতিনিধি : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ইয়াবা ব্যবসার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে মাদক বিক্রেতা সৈয়দ সম্রাট। সে উপজেলার শিহিপাশা গ্রামের সৈয়দ বাচ্চুর ছেলে।

আগৈলঝাড়া থানার এএসআই রাজু জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার মোল্লাবাড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে মাদক বিক্রেতা এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী সম্রাটকে (২০) গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় সম্রাটের কাছাকাছি অবস্থান করছিলেন পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী রিন্টু। পাশেই রিন্টুর সাথে গা ঘেঁষে একটি অন টেষ্ট কালো রংয়ের প্লাটিনা মোটর সাইকেলের উপর বসে কথা বলছিলেন র‌্যাবের এএসআই হাশেম ও কনষ্টেবল হাবিব।

এএসআই রাজু সম্রাটকে আটক করার পর ওই দুই জনের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে তারা নিজেদের র‌্যাব-৮ এর সদস্য দাবি করে তাদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

থানায় পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদকালে একটি এলিট ফোর্সে কর্মরত এএসআই হাশেম ও কনস্টবল হাবিব নামের দু’ব্যক্তির পরিচয় দিয়ে সম্রাট জানায়, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ইয়াবা সিন্ডিকেটের প্রধান হিসেবে গৈলার নিমতলা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবার ব্যবসা করে আসছে দক্ষিন শিহিপাশা গ্রামের মান্নান সরদারের ছেলে হাসান ও তার ভাই রিন্টু।

অপর গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে ওই এলাকারই জিয়া ও তার ছোট ভাই কালু। এর মধ্যে রিন্টু নিজেকে “রাহান” নামে আবার কখনও র‌্যাবের সোর্স, কখনও র‌্যাবের অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে মাদক বিক্রেতাদের জিম্মি করে টাকা আদায় করছে। তার চাহিদানুযায়ি অর্থ না দিলে তাকেই বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে গ্রেফতার করাচ্ছে রিন্টু।

ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জের ধরে রিন্টু বৃহস্পতিবার মাদক বিক্রেতা পলাশকে ধরিয়ে দেয় বলে সম্রাট তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়। এ সময় সেখানে আগৈলঝাড়ার স্থানীয় সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

সম্রাট আরও জানায়, শনিবার রাতে রিন্টু তাকে তার বাড়িতে ঘুমানোর জন্য নিয়ে যায়। গভীর রাতে ওই ২ ব্যক্তি র‌্যাব পরিচয়ে রিন্টুর বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তাকে সিন্ডিকেটের প্রধান হোতা হাসানকে ধরিয়ে দিতে বলে। সম্রাট তাতে অপরাগতা জানালে তাকে হাতকড়া পরিয়ে পিস্তল দিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সম্রাটকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, এলিট ফোর্সের বিরুদ্ধে সম্রাটের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও অন্যান্য বক্তব্য অনুযায়ী অভিযান চালানো হবে।

(টিবি/পিএস/মে ২৪, ২০১৫)