গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার খোর্দ্দা গ্রামে তাম্বুলপুর ছড়া নদীর উপর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি ঝড়ে বিধ্বস্ত হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া ও খোর্দ্দা গ্রামে ঐতিহ্যবাহী তাম্বুলপুর ছড়া নদী অবস্থিত। এই ছড়া নদীর কারণে কয়েক যুগ থেকে খোর্দ্দা ও লাটশালা চরের ৭/৮ হাজার জনগণ কখনো নৌকায়, কখনো ভেলায় বা কখনো সাঁতরে নদী পারাপার হতো।

শুধু তাই নয়, চরবাসীর কোন অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হতো নদীর কিনারে দাঁড়িয়ে। চরবাসীর ছেলে মেয়েরাও স্কুল কলেজে যেতে পারতো না। হাট-বাজারসহ অতীব জরুরি কোন কাজই হতো না সময় মত।

এই চরের মধ্যেই আছে ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। অধিকাংশ শিক্ষক দূর-দুরান্ত থেকে চরের স্কুলে গিয়ে লেখপড়া শেখান। কিন্তু এই ছড়া নদীর কারণে শিক্ষকরা নির্ধারিত সময়ে স্কুলে পৌঁছতে পারেন না। তাদের এই দীর্ঘ দিনের দুর্ভোগ লাঘব করতে ছড়া নদীর দুই কুলের জনগণ বৈঠক করে বাঁশের সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এই উদ্যোগের কারণে গত বছর কেউ বাঁশ, কেউ টাকা আবার কেউ শ্রম দিয়ে ১৩০ হাত দীর্ঘ একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন।

গত সপ্তাহে প্রচন্ড ঝড়ে বাঁশের সাঁকোটি বিধ্বস্ত হলে দুই কুলের জনগণের দুর্ভোগ আবারও চরমে উঠে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলা গাছের ভেলায় অথবা সাঁতার দিয়ে ছড়া নদী পার হচ্ছেন।

খোর্দ্দা চরের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমরা তারাপুর ইউনিয়নের ছিটমহলে যেন বাস করছি। তিনি আরো জানান, আমরা চরবাসী বন্যা, খরা, শীত উপেক্ষা করে প্রকৃতির সাথে যেন যুদ্ধ করে চলেছি।

নজরুল ইসলাম জানান, নদী পারাপারের দুর্ভোগ নিত্যদিনের সঙ্গী। তিনি আরো জানান, আমাদের এই দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই।

বাঁশের সাঁকো বিধ্বস্ত হয়ে যোগাযোগ বিছিন্ন হলেও স্থানীয় প্রশাসনের কেউ দেখতে আসেননি।

কয়েকজন দুঃখ করে বলেন, আমাদের কপালটা যেন পোড়া। তাদের দুর্ভোগ লাঘবে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

(আরআই/পিএস/মে ২৬, ২০১৫)