বরগুনা প্রতিনিধি : উপকুলীয় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের মাদারতলী,কড়ইতলা ও বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের হোগলপাতি গ্রামের মাত্র দুই কিলোমিটার ডাকাতিয়া খালটি দীর্ঘদিন ধরে নাব্যতা হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়।

এ খালের সাথে সংশ্লিষ্ট তিন গ্রামের ১৩শত হেক্টর কৃষি জমির আবাদ নির্ভরশীল । প্রতিবছর সেচ সংকটে পড়ে তিন গ্রামের কৃষিতে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে। খালটি খননের দাবিতে এলাকার কৃষকরা সংগঠিত হয়ে মানববন্ধন, সমাবেশ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি দেন। এরপর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) মরা খাল ডাকাতিয়া খালটি খনন শেষে বুধবার দুপুরে খননকৃত খালটি খুলে দিলে খালে পানির প্রবাহ শুরু হয়।

ফলে কৃষকরা এখন এ মৌসুম থেকেই কৃষি জমিতে সেচ সংকট মোকাবেলা করতে পারবেন।

জানা গেছে, মাদারতলী গ্রামের সীমান্তবর্তী চলাভাঙ্গা খালের মোহনা হতে ডাকাতিয়া খালটি দুই কিলোমিটার বয়ে গেছে পার্শ্ববর্ত নাঙ্গলভাঙা খালে মোহনা পর্যন্ত। প্রকৃতিগত ভাবেই এ শাখা খালের সৃষ্টি। বৃটিশ আমলে সৃষ্ট এ শাখা খালটি খননের অভাবে নাব্যতা হারায়। এ খালের সাথে তিন গ্রামের কৃষি জমির সেচ ও দুই হাজার কৃষক পরিবারের নিত্য ব্যবহার্য পানি নির্ভরশীল।

পানির অভাবে মৌসুমে বহু কৃষিজমি আনাবাদি হয়ে পড়ছিল। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে পানি অপসারণের উপায় না থাকায় এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কৃষকরা মরা খাল খননের দাবিতে সংগঠিত হয়ে গড়ে তোলেন মাদারতলি কৃষক সংগঠন। আর এ বিপন্ন কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে একটি বেসরকারি কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ই-জেনাস নলেজ (বারসিক) সার্বিক সহযোগিতা দেয়। কৃষকদের দাবিতে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) দুই কিলোমিটার মরা খালাট সম্প্রতি খননের উদ্যোগ নেয়।

মাদারতলী গ্রামের কৃষক সংগঠনের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা মো. শহীদ পহলান বলেন, খননের অভাবে খালটি ভরাট হয়ে মরে যায়। প্রতিবছর পানির অভাবে আমাদের কৃষি বিনষ্ট হয়। বারসিকের মাধ্যমে আমরা কৃষকরা সংগঠিত হয়ে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই। স্থানীয় সংসদ সদস্য মহোদয়ের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় খালটি বিএডিসি খনন করে দেয়। এতে আমার পানির অভাব দূর হল।

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা ও বামনা বিএডিসির উপ সহকারি প্রকৌশলী মো. মজিবুর রহমান বলেন, খালটি মরা খাল হয়ে পড়ায় সেখানকার কৃষিতে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খালটি খনন করা হয়। এতে সংশ্লিষ্ট কৃষকরা তাদের সেচ সংকট মোকাবেলা করতে পারবে।

(এমএইচ/জেএ/মে ১৭, ২০১৪)