স্টাফ রির্পোটার : আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত র‌্যাবের চাকরিচ্যুত দুই কর্মকর্তার পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার দুপুরে তাদেরকে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।

রিমান্ডপ্রাপ্তরা হলেন, র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ ও মেজর আরিফ হোসেন। অভিযুক্ত অপর চাকরিচ্যুত র‌্যাব কর্মকর্তা লে. কমান্ডার এমএম রানাকে গ্রেফতার করা যায়নি।
র‌্যাবের সাবেক ওই দুই জনকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে দুপুর ২টার দিকে তাদের আদালতে হাজির করানো হয়। এদিনই ভোরে তাদের ঢাকা ক্যান্টমেন্ট থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তারেক ও আরিফকে জেলার পুলিশ লাইনে রাখা হয়েছিলো। জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ড. খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ড. খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের চিঠি আমরা হাতে পাওয়ার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সেনা বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নৌ-বাহিনীর সাবেক লে. কমান্ডার এম.এম রানাকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করি। রাতে দুজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও এম.এম রানাকে পাওয়া যায়নি।’
প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাত জনকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোড থেকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে র‌্যাব-১১’র সিও (অধিনায়ক) লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনোজ কান্তি বড়াল ও জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামকে ২৯ এপ্রিল প্রত্যাহার করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের শীতালক্ষ্যা নদীতে ৩০ এপ্রিল অপহৃত ৭ জনের মধ্যে ৬ জনের এবং ১ মে বাকি এক জনের লাশ ভেসে ওঠে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যার ঘটনায় র‌্যাব-১১’র বিরুদ্ধে অপহৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলে বলা হয়- ‘র‌্যাব-১১’র সিও তারেক সাঈদসহ আরও কয়েকজনে মিলে নূর হোসেনের কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা নিয়ে এই ৭ জনকে হত্যা করেছে।’
অপহরণ করে হত্যার এই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ স্পষ্ট হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৬ মে লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেনকে সেনাবাহিনী থেকে এবং নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এম.এম রানাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ১১ মে হাইকোর্ট তাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। চাকরি হারানো এই তিন জনই এখন অবসরকালীন ছুটিতে রয়েছেন।
নিহত নজরুল ইসলাম নাসিক প্যানেল মেয়র ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন। নিহত অন্যরা হচ্ছেন- অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার, তার গাড়ি চালক জাহাঙ্গীর, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠনের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ কর্মী মনিরুজ্জামান স্বপন, লিটন ও গাড়ি চালক ইব্রাহিম।
(ওএস/এএস/মে ১৭, ২০১৪)