মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি : নরসিংদীর মনোহরদীতে এ্যাসিড নিক্ষেপের শিকার হয়েছে মা ও মেয়ে। শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলা চরমান্দালিয়া ইউনিয়নের চৈতান পাড়া গ্রামের মৌলভী বাড়ীতে এ ঘটনাটি ঘটে।

আহতরা হলো আব্দুল মান্নান মিয়ার স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৪২) এবং তার মেয়ে সাবিকুন্নাহার (২২)।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৮ বছর পূর্বে উভয় পরিবারের অমতে সাবিকুন্নাহার একই গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. দৌলত মিয়ার সাথে প্রেম করে বাড়ী থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। পরে বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে সাবিকুন্নাহারের পিতা আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে দৌলতের বিরুদ্বে মনোহরদী থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

দাম্পত্য জীবনের এক বছর পর তাদের কোলে এক ছেলে সন্তান জন্ম নিলে মেয়ের পিতা তাদেরকে মেনে নেয়। এরপর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বনিবনা না হলে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে।

স্বামীর সংসার ছেড়ে সাবিকুন্নাহার পিত্রালয়ে চলে আসার ৬ মাস পর একই উপজেলার চন্দনবাড়ী ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামের ইবরাহিমের সাথে আবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

সেখানেও সুখের দেখা না পেয়ে আড়াই বছর পর দ্বিতীয় স্বামীকেও ডিভোর্স দিয়ে পুনরায় পিত্রালয়ে চলে আসে সে। দ্বিতীয় স্বামীর সাথে সংসার স্থায়ীত্ব না হওয়ায় পিত্রালয়ে ফিরে আসে।

এরপর থেকে প্রথম স্বামী দৌলত মিয়া সাবিকুন্নাহারকে নিয়ে আবার সংসার করার চেষ্ঠা করে। সাবিকুন্নাহার তাকে প্রশ্রয় না দেয়ায় প্রায়ই দৌলত তাকে বিরক্ত করত এবং বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।

এরই সূত্র ধরে শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক একটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরের জানালা দিয়ে এ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয় মা রোকেয়া এবং মেয়ে সাবিকুন্নাহারের ওপর। এতে রোকেয়া বেগমের শরীরের বাম পাশ এবং সাবিকুন্নাহারের মাথা থেকে নাভি পর্যন্ত ঝলসে গেছে।

ঘটনার পরপরই তাদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আনা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। বর্তমানে মা ও মেয়ে দুজনই ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সংবাদ পেয়ে শনিবার সকালে মনোহরদী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেন।

মনোহরদী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, এ্যাসিড সন্ত্রাসের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। ঘটনাটি রাতের আধারে হওয়ায় অভিযুক্ত কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে আহতদের পরিবার সাবিকুন্নাহারের প্রথম স্বামী দৌলত মিয়া এবং তার পরিবারকে সন্দেহ করছে।

(এমএএইচ/পিএস/মে ৩০, ২০১৫)