তসলিমা নাসরিন : জান্নাত-জাহান্নামের অস্তিত্বে কোনো বিশ্বাস নেই বলে মন্তব্য করেছেন ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি বলেছেন, মানবধর্মই আমার একমাত্র ধর্ম। ছোটবেলায় আমি সকল ধর্মগ্রন্থ পড়েছি। কোরআন, বেদ, গীতা ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থ পড়ে বড় হয়েছি। যার কারণে কোনো ধর্মেই আমার বিশ্বাস নেই।

তসলিমা বলেন, আমি মানুষের জন্যই কাজ করছি। সমতা, ইনসাফ, সত্য বলা, নিজের অধিকার আদায়ে লড়াই করা আমার জীবনের দর্শন। ভারতের একটি হিন্দি দৈনিক পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। রবিবার তার সাক্ষাৎকারের সারাংশটি প্রকাশ করেছে ভারতের উর্দু দৈনিক এতেমাদ।

হিন্দি দৈনিকটির পক্ষ থেকে তসলিমা নাসরিনকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার জীবনে ধর্মের মূল্যায়ণ কী? উত্তরে তসলিমা নাসরিন বলেন, আমি কোনো ধর্মকেই বিশ্বাস করি না। ধর্ম বলতে কোনো কিছু নেই।

তসলিমা আরো বলেন, কিছু মানুষ সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে আমার বিরোধিতা করে থাকেন। তারাই যখন আমার বই পড়ে তখন সম্পূর্ণ বদলে যায়। বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের অনেক মানুষ আমাকে বলেছে, আপনার লেখা আমার জীবনকে পরিবর্তন করে দিয়েছে।

বিতর্কিত এই লেখিকা বলেন, আমার মিশন নারীদের অধিকার আদায় করা। পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছেন। তবে নির্যাতনের মাত্রা সম্প্রতি কিছুটা কমে এসেছে। আমার কথাগুলো হিন্দিতে লিখতে চাই কিন্তু হিন্দি না বুঝার কারণে লিখেতে পারছি না।

উর্দু দৈনিকটিতে বলা হয়, ধর্মবিরোধী উপন্যাস লেখার কারণে তসলিমা নাসরিনকে নির্বাসিত করা হয়। ১৯৯৩ সালে তার ‘লজ্জা’ নামক উপন্যাসের কারণে শরিয়া আদালতে তাকে হত্যার রায় দেয়া হয়।

যদিও বাংলাদেশের কোনো শরিয়া আইনে তাকে হত্যার রায় দেয়নি। তবে সে সময় ইসলাম পন্থিরা তার মাথার মূল্য ঘোষণা করে।

(ওএস/এএস/মে ৩১, ২০১৫)