বাগেরহাট প্রতিনিধি : ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার গণনা শেষে সোমবার থেকে পহেলা জুন থেকে শুরু হচ্ছে কুমির গণনা। সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের ছোট-বড় ৪শ ৫০টি নদী ও খালে রয়েছে বিপুল সংখক লবন পানির কুমির । কুমির সংরক্ষণে ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এই গণনা কাজ চলবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। সুন্দরবন বিভাগ এতথ্য নিশ্চিত করেছে।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, সুন্দরবনের কোন কোন এলাকায় কুমির বেশি অবস্থান করে তা জেনে সংরক্ষণের উদ্দেশে এই গণনার কাজ চালানো হচ্ছে।

এছাড়া কুমিরের বংশ বিস্তার বা তার জীবন যাত্রার হুমকিগুলো সনাক্ত করার পর তা মোকাবিলায় সুন্দরবন বিভাগ ব্যবস্থা নেবে। তিনি জানান, এক একটি মাদি কুমির বছরে ৬০/৭০ টি ডিম পাড়ে। পুরুষ জাতের কুমিরের সাথে স্ত্রী জাতের কুমিরের মিলন না হলে ওই সব ডিম থেকে বাচ্চা হয়না। এছাড়া সুন্দরবনের গুইসাপ ও শুকরসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণি ডিমগুলো খেয়ে ফেলে। যে কারণে এর প্রজনন বিঘ্নিত হয়ে আসছে।

বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ জিপিএস সিস্টেমের সাহায্যে সুন্দরবনে পহেলা জুন থেকে কুমির গণনার কাজ শুরু করবে। কার্যক্রমটি শেষ হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। সুন্দরবন বিভাগের সহযোগিতায় ক্যারিনাম নামের একটি বেসরকারি সংস্থা ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এই কুমির গণনার কাজটি করবে। কুমির গণনা কাজে প্রতিটি দলে ১০ জন করে নৌযানের মাধ্যমে সুন্দরবনের অভ্যন্তরের নদী-খালে ঘুরে ভাসমান কুমির ও নদী বা খালের তীরে থাকা কুমির গণনা করবে। কুমিরের প্রজনন ও বংশ বিস্তারে কি-কি হুমকি রয়েছে তা সনাক্ত করে সুপারিশমালা তৈরি করে সুন্দরবন বিভাগকে জানাবে।

পাশাপাশি কুমিরের হুমকিগুলো মোকাবেলায় সুপারিশ করতে বলা হয়েছে। সুন্দরবনের মধ্যে কুমির লবনাক্ত পানিতে থাকে। তবে ডিম পাড়ার সময় অপেক্ষাকৃত কম লোনা পানিতে চলে আসে। এই গণনার ফলাফলের পর কুমিরের সংখ্যা কোন অঞ্চলে বেশি বা কম ও প্রতি কিলোমিটারে কুমিরের ঘনত্বসহ বিভিন্ন বিষয় হাল নাগাদ তথ্য উঠে আসবে।

বর্তমানে এই বাদাবনে ১৫০ থেকে ২০০টি কুমির রয়েছে বলে ধারনা সুন্দরবন বিভাগের। বাংলাদেশ অংশে ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটারের সুন্দরবনে জল ভাগের পরিমান ১ হাজার ৮শ’ ৭৪ বর্গ কিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১.১৫ ভাগ। এই বিশাল জল ভাগের ছোট-বড় ৪শ’ ৫০টি নদী ও খালে এই গণনার কাজ চালবে। কার্যক্রমটি শেষে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জানা যাবে সুন্দরবনে কুমিরের প্রকৃত সংখ্যা।

(একে/এএস/মে ৩১, ২০১৫)