মাদারীপুর প্রতিনিধি :মাদারীপুর সদর উপজেলার চরঘুনসি গ্রামে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করেছে মসজিদের ইমাম ওবাইদুর (২৫)। শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চরঘুনসী গ্রামের হাওলাদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম ওবাইদুর এর কাছে আরবী পড়তে যায় চরঘুনসী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ঐ ছাত্রী।

শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আরবী পড়া শেষে ধর্ষক ওবাইদুর শিশুটিকে মসজিদ ঝাড়– দিতে বলে।
এসময় শিশুটিকে একা পেয়ে ওবাইদুর মসজিদের সাথে লাগানো বারান্দায় তাকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে। শিশুটির মুখ বেধে ধর্ষণ করে। এতে শিশুটির প্রচুর রক্তপাত হয় ও অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।
এসময় ধর্ষক ওবাইদুর শিশুটিকে বলে, বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি না জানাতে। জানালে তাকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দেবে। এতে করে ভয়ে শিশুটি চুপ থাকলেও বাড়িতে গিয়ে সব ঘটনা তার মাকে জানায়। মা দ্রুত তাকে গ্রাম্য এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে গোপনাঙ্গে সেলাইসহ চিকিৎসা করায়।
রাতে শিশুটির আরো গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে রবিবার সকালে তাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
শিশুটির বাবা বলেন, আমি ঢাকা ছিলাম। খবর পাইয়া দেশে আসি। এসে মেয়ের এই অবস্থা দেইখ্যা মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়া আছি।
মামলা দিবেন কিনা এই ব্যাপারে জানতে চাইলে শিশুটির বাবা বলেন, মামলা করার মতো বা মামলা করার পর তা চালানোর মতো টাকা আমাদের নেই। তাই মামলা করবো কিনা এখনও বুঝতেছিনা। দেখি কি করা যায়। তবে যে ভাবেই হোক আমি ঐ হুজুর ওবাইদুরের বিচার চাই। ওর শাস্তি হওয়া উচিত।
শিশুটির মা বলেন, আমার এতটুকু মেয়েকে যে ধর্ষণ করলো তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া উচিত। তাতে করে ঐ হুজুর যেন অন্য কোন জেলায় গিয়ে মসজিদের ইমামতি করা আড়ালে কোন শিশুকে ধর্ষণ করতে না পারে।
চরঘুনসি হাওলাদার বাড়ি জামে মসজিদের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হাজী মোবারক হাওলাদার বলেন, আমরাও ওর পুরো পরিচয় জানিনা। অনেকদিন ধরে এখানে মসজিদে নামাজ পড়াচ্ছে। যতটুকু জানি ওর বাড়ি বরিশালের নাজিরপুরে। ঘটনার পর থেকে ও পালিয়ে গেছে। ওকে খোজার ও পরিচয়ের ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।
মাদারীপুর নারী উন্নয়ন সংস্থা নকসি কথা’র নির্বাহী পরিচালক আয়শা সিদ্দিকা বলেন, হঠাৎ করে মাদারীপুরে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া। সেই সাথে এই ছ্ট্টো শিশুটির ঘটনায় ধর্ষককে গ্রেফতার করে আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাল বলেন, বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে শুনেছি। অপরাধীকে ধরার জন্য সব ধরণের চেষ্টা করা হবে।


(এমএইচএম/এসসি/জুন০১,২০১৫)