সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি সীমান্তে আটককৃত আসামী পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার অভিযোগ এক মুক্তিযোদ্ধার মেয়েসহ চার নারী শ্রমিককে অমানুষিক নির্যাতন করে মামলা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাতক্ষীরা প্রতিবাদি জনতার ব্যানারে শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে শনিবার সকাল ১১টায় মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইনামুল হক বিশ্বাস, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. শাহ আলম, নারী মুক্তি সংসদের সভাপতি নাসরিন খান লিপি ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সহ-সভাপতি লায়লা পারভীন সেজুতি। মানববন্ধনে নারী সংগঠনের নেতাকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, গত ১৫ মে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলারোয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী কেড়াগাছি গ্রামের বিজিবি’র উপর হামলাসহ পাঁচটি মাদক মামলার পলাতক আসামী আব্দুল আলীমকে আটক করে পুলিশ। এ সময় মা ও স্ত্রীর সহযোগিতায় চোরাঘাট মালিক ও মাদক পাচারকারি বিবস্ত্র অবস্থায় পালিয়ে ভারতে চলে যায়। পুলিশ আলীমকে ধাওয়া করলে কয়েকজন গ্রামবাসি তাদেরকে বাধা দেয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ এসে হামলাকারিদের না পেয়ে নিরীহ গ্রামবাসি আঙুর বেগম, বাক প্রতিবন্ধি মিণ্টু, স্কুল ছাত্র মিলন, মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশীদের মেয়ে ও আসামী আব্দুল আলীমের চাচাত বোন দিনমজুর ফাতেমা, নুরুন্নাহান ও জাহানারা খাতুনকে রাস্তায় ও ঘরের মধ্যে ফেলে বাঁশের লাঠি দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। স্থানীয় লোকজন শেষোক্ত তিনজনকে উদ্ধার করে বিকেলে কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে পুলিশ নিজেদের দোষ ঢাকতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফাতেমা, নুরুন্নাহার ও জাহানারাসহ ১০ জনের নাম উল্রেখ করে থানায় একটি মামলা করে। একপর্য়ায়ে কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডটি হাজতখানা বানিয়ে পুলিশ প্রহরায় তিন নারী শ্রমিককে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় আহতদের স্বজন ও সাংবাদিকদের চিকিৎসাধীন ওই তিন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে বাধা দেওয়া হয়। বক্তারা অবিলম্বে নিরীহ তিন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার, আহতদের চিকিৎসা খরচ বহনসহ দোষী পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহারের দাবি জানান। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে প্রত্যাহার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
একই দাবিতে দুপুর সাড়ে ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলননে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা নারী মুক্তি সংসদের সভাপতি নাসরিন খান লিপি। সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী, রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী, নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও মানবাধিকার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
(আরকে/এএস/মে ১৭, ২০১৪)