রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর আবাবিল ইউনিয়ন যুবলীগের প্রচার সম্পাদক মনু মিয়া খুন হওয়ার আড়াই মাস পরও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মনু মিয়ার স্ত্রীর অভিযোগ, আসামিরা আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রয়েছেন। এদিকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদী এবং মনুর স্ত্রীকে প্রতিনিয়ত আসামিরা হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলার প্রধান আসামীকে বাদ দেওয়া জন্য রাজনৈতিক বিভিন্নমহল থেকে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

গত ১৩ মার্চ মনু মিয়াকে রাস্তার ওপর প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়। পরে ১৬ মার্চ তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহত মনু মিয়ার ভাগনে মো. নাদিম বাদী হয়ে রায়পুর থানায় মামলা করেন। এতে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যৈষ্ঠ সহসভাপতি ও চর আবাবিল ইউপির চেয়ারম্যান শহিদ উল্যার ছেলে মঞ্জুর হোসেন ওরফে সুমনকে প্রধান আসামিসহ মোট ১০ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। এতে প্রধান আসামীকে মামলার এজাহার থেকে বাদ দেওয়া জন্য আ’লীগের বিভিন্নমহল থেকে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও মামলার বাদী জানা।

সোমাবার দুপুরে বাদী অভিযোগ করে সংবাদিকদের জানান, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। এঘটনায় আসামীরা কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ায়। মামলা প্রত্যাহারের জন্য তাঁকে ও মনু মিয়ার স্ত্রী সামছুর নাহারকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি গত ৪ এপ্রিল পুলিশ ও র‌্যাব বক্সে লিখিতভাবে জানানো হয়। আসামীদের হুমকিতে তারা এখন এলাকা ছাড়া।
নিহত মনু মিয়ার স্ত্রী সামছুর নাহার বলেন, আওয়ামী লীগের জন্য আমার স্বামী নিবেদিত ছিল এবং দলের একজন এট্রিভ কর্মী। সে যুবলীগের জন্য রাজপথে বিএনপি-জামায়াতের সাথে অংশ বার মুখমুখি হয়েছে। যারা আমার স্বামীর খুনি, তারা এখন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তিন-চারজন নেতার আশ্রয়ে আছে। আবার না কী সে যুবলীগের সভাপতি হয়ে এলাকায় ফিরছেন। যুবলীগ নেতা মেরে যুবলীগের সভাপতি হওয়া যায় এটা কোন দেশের আইনে রয়েছে। ওই নেতাদের ভয়ে পুলিশ আসামিদের ধরে না।
অপর দিকে মামলার প্রধান আসামি মঞ্জুর হোসেন দাবি করেন, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।

চর আবাবিল ইউনিয়নর যুবলীগের সভাপতি কৌশিক আহম্মেদ সোহেল বলেন, যুবলীগ নেতা মেরে উপজেলা যুবলীগের নেতা হওয়া যায় বিষটি শুনে আমারাও হতাশ। সুমন এসব কথা এলাকায় বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সে উপজেলা যুবলীগের নেতা হলে মনু মিয়ার পুরো পরিবার শেষ করে দিবে বলেও অনেকের কাছে বলে। এখান সুমনের শুধু নেতা হাওয়ার অপেক্ষায়।

তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খোকন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মনু মিয়ার হত্যা মামলার আসামিরা আওয়ামী লীগের কোনো নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে নেই। হত্যাকান্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার হোক এটা আমরাও চাই।
রায়পুর থানার ওসি আবদুল্লাহ-আল-মামুন ভূঁইয়া বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য রায়পুরসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। সাক্ষীদের জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

(এমআরএস/পিবি/জুন ০১,২০১৫)