নাটোর প্রতিনিধি : রাজমিস্ত্রি দেলোয়ার হোসেন শাকিল নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েছে।

বাবা-মা থেকেও নেই। মেধাবী শাকিলকে লেখাপড়ার জন্য রাজমিস্ত্রির কাজ করতে হয়েছে। তার বাবা বাগাতিপাড়া উপজেলার মুন্সিপাড়া গ্রামের চয়েন হোসেন অনেক আগেই শাকিলের মা শহিদা বেগমকে ছেড়ে আরেকটি বিয়ে করে। এর কিছুদিন পরই মা শহিদা বেগম তাকে ফেলে রেখে অন্য একজনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

শিশু শাকিল তার খালা মতিজান বেগম ও দিনমজুর খালু উজির হোসেনের আশ্রয়ে বড় হতে থাকে। তারা লেখাপড়ার খরচ যোগান দিতে না পারায় শাকিল নিজেই রাজমিস্ত্রির যোগানদার হিসেবে দিনমজুরী করে লেখাপড়ার খরচ চালাতে থাকে। একসময় সে নিজেই রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করে। শুরু থেকেই বই, খাতা, কলম কিনতে এমনকি বাণিজ্য বিভাগের পড়তে প্রাইভেট পড়ার খরচ জোগাতে থাকে।

এছাড়া খালু ও খালাতো ভাই মামুন ও মনিরুল তার লেখা-পড়ার আংশিক খরচ চালাতো। নিজে সারাদিন হাড় ভাঙ্গা খাটুনির পর রাতে পড়তে বসতো সে। ফলাফল ঘোষণার দিনও শাকিল কাজ করছিল। সহপাঠীরা ফোন করে তাকে তার রেজাল্টের খবর দেয়। আনন্দের খবরটি সে তার মা-বাবাকে জানাতে পারেনি। এখন খালা-খালুসহ খালাতো ভাইয়েরা তার লেখাপড়ার খরচ আর চালাতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে।

দেলোয়ার হোসেন শাকিল জানায়, তার স্বপ্ন ছিল সে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে সরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হবে। কিন্তু এখন কলেজে ভর্তি হওয়ার মত অবস্থা নেই তার। সে হৃদয়বানদের কাছে তাকে সহায়তার আবেদন জানিয়েছে। সহায়তা না পেলে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম জানান, সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর কেবল প্রাইভেট ও রাতে বাড়িতে পড়ে দোলোয়ার হোসেন শাকিল জিপিএ-৫ পেয়েছে। সহায়তা পেলে সে তার অদম্য ইচ্ছা পূরণ করতে সক্ষম হবে।

(এমআর/পিএস/জুন ০৮, ২০১৫)