লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : মাদকসেবনকারী ও বিক্রেতাদের কাছে যুগ যুগ ধরে জিম্মি ছিল রায়পুরবাসী। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চিহ্নিত ১০ থেকে ১৫টি মাদকের স্পটকে কেন্দ্র করে উপজেলার শান্তিপ্রিয় মানুষ এক সময় চরম অস্বস্তিতে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা অনেকটাই নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে রায়পুর থানা পুলিশ। চিহ্নিত এসব মাদকের স্পটগুলো নির্মূলে রায়পুর থানা পুলিশ অভিযান অব্যাহত রাখায় বেশ স্বস্তিতে রয়েছে এলাকার জনগণ। মাদকের অভয়ারণ্য এ উপজেলার যুব সমাজের বড় একটি অংশ মাদকের হিংস্র থাবায় এখন ক্ষতবিক্ষত। মাদক থেকে সৃষ্ট সমাজবিরোধী কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ জনগণ এখন অনেকটাই স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন এলাকার ভুক্তভোগীরা।

স্থানীয়রা জানায়, মাদকের ওই স্পটে আসা ভাসমান মাদকসেবীরা এলাকায় চুরি-ডাকাতিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে এলাকার পরিবেশকে বেশ অশান্ত করে তুলেছিল। আর এসবের প্রতিবাদ করে এলাকার নিরীহ লোকজনসহ সাধারণ সচেতন নাগরিকদের চরম মাশুল দিতে হয়েছে। মাদক ব্যবসা ও সেবনকে কেন্দ্র করে এলাকায় বেশ দাঙ্গা হাঙ্গামাসহ খুনের ঘটনাও ঘটেছে অনেক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন ভূইয়া গত বছরের ২৪ এপ্রিল এ থানায় যোগদানের পর এলাকার নির্যাতিত জনগণের জোড়ালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, পুলিশ সুপারের নির্দেশনা ও সহযোগিতায় মাদকের বিরুদ্ধে সর্বোপরি অভিযান শুরু করে। অভিযানের শুরুতে তিনি বেশ বেকায়দায় পড়লেও দীর্ঘদিনের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আপসহীন নীতির কারণে মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। মাদকের ব্যাপারে অভিযানে সাফল্য দেখিয়ে ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন ভূইয়াকে মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুর পুলিস সুপারের কার্যালয়ে জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে পুলিশ পদক প্রধান করেন জেলা পুলিশ সুপার।
এসময় মাদকের ওইসব স্পটগুলো নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের ফলে সংশিষ্ট এলাকার সাধারণ জনগণ বেশ স্বস্তি প্রকাশ করে এলাকাবাসী ওসি মামুন ভূইয়াকে সংবর্ধনা দিয়ে অন্য মাদকের স্পটগুলো নির্মূলের দাবি জানান।
মাদক সম্রাট ইয়াবা রাজু, কাঠাল ফারুক, নিবর ও ফয়েজসহ বিভিন্ন মামলায় অন্তত ৬’শ ওপরে আসামীদের গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণের ফলে মাদকের ভয়াল গ্রাস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। বিগত দেড় মাসে রায়পুর থানায় মাদক আইনে মোট ২৬টি মামলা হয়েছে। মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শতাধিক ব্যবসায়ীকে জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৩১৫ বোতল ফেনসিডিল ও ১১৬ লিটার বাংলা মদ ও চোলাই মদ, ৪২৩ পিস ইয়াবা, ৩৭০ কেজি গাঁজা নেশাজাতীয় ইনজেকশন ৫০০ পিস এবং ৯৯ বোতল হুইস্কি উদ্ধার করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৮ মাসে ৩২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে।
(এমআরএস/পিবি/জুন ১০,২০১৫)