গাইবান্ধা প্রতিনিধি : যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বুধবার গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়ায় বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর আওতাধীন স্কুল ফিডিংয়ের জন্য বিস্কুট তৈরি বাবদ যুক্তরাষ্ট্রে বরাদ্দকৃত গম আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।

এই উপলক্ষে কঞ্চিপাড়া ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি দপ্তর ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু বক্কর সিদ্দিক, পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্রে কৃষি মন্ত্রণালয়ের মিনিস্টার কাউন্সিলর স্কট সিন্ডেলার বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রতিনিধি ক্রিস্টা রাডার, ফুলছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।

এছাড়া এই অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, এনজিও কর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেয়।

উল্লেখ্য, গত এক দশক ধরে ইউএসডিএ ম্যাকগভার্ন-ডোন প্রোগ্রাম বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর সাথে যৌথভাবে গাইবান্ধাসহ রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়নরত ৩ লাখ ৫০ হাজার শিশু শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের নাস্তা হিসেবে পুষ্টিকর বিস্কুট বিতরণ করে আসছে। এরমধ্যে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার প্রায় ১ হাজার স্কুলে গড়ে ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই বিস্কুট পাবে।

এই বিস্কুট তৈরীতে যুক্তরাষ্ট্র গত ৩ বছর ধরে প্রতিবছর ২৯ হাজার মে. টন উন্নতমানের সাদা গম বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী হিসেবে প্রদান করে আসছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী তাদের নিজস্ব কারখানায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রদত্ত গম থেকে এই বিস্কুট উৎপাদন করে বিতরণ করা হচ্ছে। জানা গেছে, এই স্কুল ফিডিং কর্মসূচীর আওতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদেরকে প্রতিদিন ৭৫ গ্রামের ৫টি বিস্কুটের একটি প্যাকেট নাস্তার জন্য দেয়া হয়ে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, ইউএসডিএ’র এই অনুদানের অধীনে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথভাবে সকল স্কুলকে এই স্কুল খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় আনবে। এতে ২০১৭ সালের মধ্যে এই স্কুলগুলোকে বাংলাদেশ সরকারের দারিদ্র প্রবণ এলাকায় জাতীয় স্কুল খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় স্কুল খাদ্য কর্মসূচী মডেলের মাধ্যমে স্কুলে খাদ্য সরবরাহের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী বাংলাদেশ সরকারের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করছে।

ইউএসডিএ ম্যাকগভার্ন ডোল কর্মসূচী আরো কিছু সহায়ক কর্মসূচীকে সহায়তা দেয়, যা শিক্ষকদের উপস্থিতি বাড়াতে উৎসাহিত করে এবং শ্রেণীকক্ষে পাঠদান নির্দেশিকার মান উন্নয়ন করে। সেই সাথে স্কুলে উপস্থিতির সংখ্যা, শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়াতে ও ক্ষুধা নিবৃত্ত করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশ শিশুদের স্বাস্থ্য এবং সমাজে শিক্ষার স্তর উন্নয়নে যে সফলতা অর্জন করেছে তার ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে এই কর্মসূচী।

(আরআই/এএস/জুন ১০, ২০১৫)