ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহি রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মুল পুরাতনভবনটি ৯ বছর পূর্বে পরিত্যক্ত ঘোষণা এবং এক বছরপূর্বে নতুন ভবন নির্মানের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও ভেঙ্গে পুনরায় নির্মাণের কাজ অজ্ঞাত কারণে শুরু হচ্ছে না।

বর্তমানে ওই অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন যেকোন সময় ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর জীবন বাঁচানোর জন্য নিরুপায় হয়ে জালের বেড়া দিয়ে রেখেছেন।

জানা গেছে, গত ০৫/০১/২০০৬ তারিখ এ বিদ্যালয়ের কয়েকটি কক্ষ পরিত্যাক্ত ঘোষণা করায় সেই থেকেই কক্ষ সংকটে শিক্ষা ব্যবস্থা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের পুরো মুলভবনটি ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় ঝালকাঠি শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী গত দুই বছর পুর্বে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করেন।

মূলভবনের নিচ তলায় প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন, গ্রন্থগার, বিজ্ঞানাগার, ষ্টোর রুম, টয়লেট-বাথরুম ও ৩টি শ্রেণীকক্ষ ছিল এবং দ্বিতীয় তলায় ৮টি শ্রেণী কক্ষ ছিল। দক্ষিন মুখি ইউ সেপ্ট বিদ্যালয়ের পূর্ব-পশ্চিম পাশের দুটি সল্প দৈর্ঘ্য ভবন থাকলেও প্রতি শ্রেণীতে শতাধিক শিক্ষার্থী থাকায় কক্ষ সংকটে সেকশন করা সম্ভব হচ্ছে না।

সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভাগ করে একই শিক্ষক দ্বারা কষ্ট করে ক্লাশ নেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞান ও কমার্সের আলাদা ক্লাশ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এমনকি কক্ষ সংকটে কারণে বিদ্যালয়ের চত্বরে একটি অস্থায়ী টিনের ঘর নির্মাণ করে তিনটি কক্ষে প্রচন্ড গরমে গাদাগাদি করে ক্লাশ নেয়া হচ্ছে। ওই ভবনটি ভেঙ্গে পড়ে যে কোন সময় বড় ধড়নের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে ভবনের সামনে জালের ভেড়া দিয়ে আটকে রেখে সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়টি ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠা করার পরে শিক্ষায় সুনাম সারাদেশে পরিচিতি পেয়েছে। এ বিদ্যালয়ের ছাত্র আজ সচিব, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার, স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষক, বুয়েট বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে গুরুত্বের সাথে দেশপরিচালনার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এমনকি এমপি-মন্ত্রী পর্যন্ত হয়েছেন। সুনাম সুখ্যাতি থাকা সত্ত্বেও আজ বিদ্যালয়টি যেন বিভিন্ন কারনে অবহেলার প্রতিষ্ঠান হয়েছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, গত এক বছর পূর্বে নতুন ভবন নির্মানের জন্য দেড়কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বরিশালের প্রকৌশলী আবুল বশারের কাছে একাধিক বার ধর্না দিলেও প্রতিবারই তিনি শীঘ্রই কাজ শুরু হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। ভবনটি অতি দ্রুত নির্মাণ করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অভিভাবকসহ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ দাবি জানিয়েছেন।

(এএম/এএস/জুন ১০, ২০১৫)