লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের একটি বাসায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ২ বাংলাদেশির মধ্যে ১ জনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার।

তার নাম আব্দুর রহমান (৫০)। তিনি উপজেলার ৩নং চরমোহনা ইউনিয়নের উত্তর রায়পুর এলাকার মৃত নোয়াব আলী হাওলাদারের একমাত্র ছেলে।

বুধবার সকালে দাম্মাম এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আব্দুর রহমানের সাথে ফেনীর মোহাম্মদ বশির মারা যান। নিহত স্বামী আব্দুর রহমানের মৃত্যুর সংবাদের পর থেকে স্ত্রী রাবেয়া আক্তার বাকরুদ্ধ রয়েছেন।

সকালে রহিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় চরমোহনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম মিঠু।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে নিহত প্রবাসীর বাড়িতে গেলে তার সন্তানরা জানান, বুধবার সকালে সৌদি থেকে তার মামা শাহাজান মুঠোফোনে তাদের জানান, তাদের বাবা দোকান থেকে বাসায় গেলে গ্যাস লাইনের সমস্যার কারণে সিলেন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে ঘটনান্থলে মারা যায়। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েই মা রাবেয়া আক্তার জ্ঞান হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আব্দুর রহমানের ২ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, নিহতের বড় ছেলে শাহিন হোসেন রামগঞ্জ সরকারী কলেজে বিবিএ ২য় বর্ষে, ছোট ছেলে সজিব রায়পুর সরকারী কলেজে এইচএসসি ২য় বর্ষে ও মেয়ে তানজিনা আক্তার রায়পুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত রয়েছে। তাদের পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন বাবা। নিহত আব্দুর রহিমের কোন ভাইবোন নেই।

নিহতের কলেজ পড়ুয়া ছেলে শাহিন হোসেন জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে তার বাবা তাদের মামার মুদি দোকানে চাকুরী করছিলেন। দাদীর মৃত্যুর সংবাদ শুনে বাড়িতে এসে কয়েকদিন থেকে গত বছরের ৫ রমজানে সৌদি চলে যান। দীর্ঘদিন তিনি প্রবাসে থাকলেও সংসার ও তাদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে তেমন কিছুই করতে পারেন নি। এখন বাবার লাশটি বাড়িতে কীভাবে আনা যায় সেই সহযোগিতার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান।

স্কুল পড়ুয়া ছোট মেয়ে তানজিনা আক্তার বলেন, সে সহ তার ২ ভাইয়ের লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বাবা ছাড়া কিভাবে তাদের সংসার চলবে তাই নিয়ে চিন্তিত তারা।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আলম বলেন, সৌদিতে নিহত প্রবাসী আব্দুর রহিমের লাশটি দেশে আনার ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে।

(এমআরএস/পিএস/জুন ১১, ২০১৫)