স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জে অপহরণ ও সাত খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন চাকরিচ্যুত র‌্যাব কর্মকর্তা লে. কমান্ডার এমএম রানাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তাকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে রাখা হয়েছে। মিলিটারি পুলিশের সহায়তায় শনিবার গভীর রাতে গ্রেপ্তারের পর রানাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ দুপুর তিন টার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে তোলা হতে পারে বলে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন।

আদালতে কিভাবে রানাকে তোলা হবে সে ব্যাপারে দিক-নির্দেশনা দেয়ার জন্য পুলিশ সুপার আজ দুপুর ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে যান। এবং সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করেন তিনি। একটি সূত্র জানিয়েছে র‌্যাব কর্মকর্তা রানাকেও রিমান্ডে নেয়া হতে পারে। এদিকে রানাকে যাতে খুনের মামলার আসামি হিসাবে আদালতে হাজির করা হয় সে দাবি জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী নেতারা। তারা আজো যথারীতি এক ঘণ্টার জন্য আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করেন।এসময় তারা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন।

আগের দিন শনিবার র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও মেজর আরিফ হোসেনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তারেক ও আরিফকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হলেও রানাকে ঠিক কোন ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।

শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

তাঁকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে রাত ১২টার পর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। চাকরি হারানো নৌবাহিনীর সাবেক এই কর্মকর্তাকে ধরতে বনানী থানায় চাহিদাপত্র (রিকুইজিশন) পাঠায় নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন রানাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাঁকে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এর আগে শনিবার ভোরে ওই এলাকা থেকে একই ঘটনায় অভিযুক্ত র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও মেজর আরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহরণের শিকার হন নারাযণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। এর তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল ছয়জনের এবং পরদিন আরও একজনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।


এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করে নজরুলের পরিবার। ৪ মে নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ছয় কোটি টাকার বিনিময়ে র‌্যাবের তিন কর্মকর্তা সাত জনকে অপহরণ করে খুন করেন।পরে র‌্যাব-১১ এর এই তিন কর্মকর্তাকে নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরতের পর তাঁদের অবসরে পাঠানো হয়। ১১ মে হাইকোর্ট দেয়া গ্রেপ্তারের নির্দেশের পর তাঁদের তিন জনই গ্রেপ্তার হন।

(ওএস/এটিআর/মে ১৮, ২০১৪)