শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক : বাংলাদেশের একজন বরেণ্য কথাসাহিত্যিক কায়েস আহমদ। ১৯৪৮ সালের ২৫ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ কামাল উদ্দিন আহমদ এবং মাতার নাম ওলিউন্নেসা।

১৯৯২ সালে ১৪ জুন মাত্র চুয়াল্লিশ বছর বয়সে এই দেশবরেণ্য কথা সাহিত্যিক আমাদের ছেড়ে চলে যান। এই স্বল্প পরিসরে তাঁর লেখা বাংলা সাহিত্যের ভান্ডারে অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। জীবন সংগ্রামে লড়াকু সাধারণ মানুষ ও প্রান্তিক মানুষ ও পরিপার্শ সমাজই তাঁর লেখার প্রধান উপজীব্য। এছাড়া দেশ বিভাগের কাটা-চেরা, ক্ষত-বিক্ষত, শিকরবিহীন মানুষের অহর্নিশ আর্তনাদও তাঁর সৃষ্টির অনেকটা জায়গা জুড়ে আছে।

গত ১৪ জুন ২০১৫ ছিল তাঁর ২৩তম মৃত্যুদিন। কায়েস আহমেদের অমর সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে উপন্যাস- নির্বাসিত একজন, দিনযাপন, গল্পগ্রন্থ- অন্ধ তীরন্দাজ, লাশকাটা ঘর, সম্পাদনা গ্রন্থ- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া তাঁর অগ্রন্থিত বহু গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, চঠিপত্র রয়েছে। যা প্রকাশিত হয়েছে 'কায়েস আহমেদ সমগ্র' এবং 'অগ্রন্থিত কায়েস আহমেদ'- এ।

দেশবিভাগের যে যন্ত্রনা অহর্নিশ তাঁকে কাতর করতো, তারই একটি ছবি তাঁর লেখা 'কুষ্ঠব্যাধি'-তে। কুষ্ঠব্যাধি কবিতার মূল চরিত্রের নাম 'চন্দ্রমোহন'। যে দেশভাগের সময় তার ভিটেমাটি, গাছপালা সব ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল ভারতে।

আজো আমরা এই স্বাধীন বাংলায় কায়েস আহমেদের চন্দ্রমোহনকে দেখতে পাই। তবে একজন চন্দ্রমোহন নয়। হাজার হাজার চন্দ্রমোহন, লাখ লাখ চন্দ্রমোহন। যারা এখন নির্যাতিত হয়ে নয় অধর্ম এবং লোভে দেশের মাটি, বাতাস, ভালোবাসা অস্বীকার করে পালায়, শিকড় ছিঁড়ে দৌড়ায়...।

১৯৯২ সালে কায়েস আহমেদের মৃত্যুতে সারা দেশের কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবি সকলের বুক চিরে হাহাকারোচ্ছ্বাস উঠেছিল সকল পত্রিকার প্রথম পাতায় ছিল কায়েস আহমদ। আজ আর তাঁদের দেখা নেই। তাঁরাও ভুলে যেতে বসেছে কায়েস আহমেদের জন্ম-মৃত্যুর সময়।

কায়েস আহমেদ আমাদের মাঝে নেই। তবুও তিনি তাঁর সৃষ্টি দিয়ে অমর হয়ে থাকবেন আমাদের মাঝে, বাংলা সাহিত্যে। কায়েস আহমেদের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।