আল ফয়সাল বিকাশ( বান্দরবান ):৪দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের বাজালিয়ার বরদুয়ারা এলাকায় বন্যার পানিতে আন্ত:প্রধান সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় সারাদেশের সাথে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আন্ত :প্রধান এই সড়কের ৫ফুট উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় সড়কের উপর জাল দিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন নানা বয়সের অসংখ্য মানুষ। পাশাপাশি বান্দরবান রাঙাগামাটি সড়কের পুলপাড়া এলাকায় বেইলী ব্রীজ তলিয়ে যাওয়ার কারণে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ভ্যানগাড়ি ও রিকশা ও নৌকায় চড়ে চলাচল করছেন দুই পাশের মানুষ। এ ছাড়াও পাহাড় ধ্বাসের কারণে রাঙ্গামাটি জেলা এবং বান্দরবানের তিন উপজেলা রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানছি সড়কেও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে ভারী বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলে জেলার লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি ও বান্দরবান সদর উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। জেলা শহরের আর্মি পাড়া, মেম্বারপাড়া, ইসলাম পুর, শেরে বাংলা নগরসহ নদী তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার বন্যা কবলিত মানুষ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় গ্রহন করেছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি বন্যা দুর্গতদের জন্য ৫০ মেট্রিকটন চাল ও ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়ার কথা ঘোষনা দিয়েছেন। অপরদিকে আশ্রয় কেন্দ্র গুলো পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী বন্যা দুর্গতদের জন্য ৫’শত পেকেট ইফতারী বিতরণ করেছেন।

লামা উপজেলা প্রতিনিধি জানান, লামা পৌর এলাকার ৫টি ওয়ার্ডের হাজারো পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। মাতামুহুরী নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলা ভবন, থানা ভবন, নয়া পাড়া, টি.এন্ড টি পাড়া, উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকা, লামা বাস স্ট্যান্ড, মধুঝিরি, লাইনঝিরি ও হাসপাতাল এলাকার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়ে। এ ছাড়াও বাঁকখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নাইক্ষ্যংছড়ির বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয় এবং উপজেলা ভবনের সরকারী অফিস গুলোর ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে বলে স্থানীয় সুত্র জানায়।

সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যহত থাকায় স্থায়ী বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। এদিকে জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী জানান, পাহাড় ধ্বসের আশংকায় ঝুকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে ৭ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ইতিমধ্যে বেশ কিছু পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন। অপরদিকে পাহাড় ধ্বসের কারনে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানছি উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও থানছি উপজেলা উজানে ব্যাপক বৃষ্টি হওয়ায় নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় তিন্দু ও রেমাক্রী ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় নদী পথে কোন নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত বোট চলাচল করছে না। ফলে দুটি ইউনিয়নের জন-সাধারণ আটকা পড়েছে। এসব এলাকায় বেড়াতে যাওয়া বেশ কিছু পর্যটকও আটকা পড়েছে বলে রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান মালিরাম ত্রিপুরা সাংবাদিকদের অবহিত করেছেন।
.
(এএফবি/এসসি/জুন২৫,২০১৫)