বরগুনা প্রতিনিধি : তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে একটি অংশিদারী পুকুর ভরাটকে কেন্দ্র করে ঝগড়ার একপর্যায়ে চাচা নৃত্য চন্দ্র মিস্ত্রির লাঠির আঘাতে ব্যাংক কর্মকর্তা বিপ্লব চন্দ্র মিস্ত্রী খুন হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তালতলী থানা পুলিশ রাতেই চাচা নৃত্য চন্দ্র মিস্ত্রি ও তার স্ত্রী সরজিনি রানি এবং আরেক চাচা সনাক চন্দ্র মিস্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহতের ছোট ভাই দুলাল চন্দ্র মিস্ত্রী জানান, বাড়িতে সকলের ব্যবহৃত একটি অংশীদারী পুকুর চাচা নৃত্য চন্দ্র মিস্ত্রী অন্য শরীকদের কিছু না বলেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তার অংশ ভরাট করার জন্য মাটি ফেলা শুরু করেন। বাড়ির অন্য শরিকরা এর প্রতিবাদ করলেও সে মাটি ফেলা বন্ধ করেনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার সময় নৃত্য চন্দ্র মিস্ত্রীর বড় ভাই চিত্ত রঞ্জন মিস্ত্রীর ছেলে পটুয়াখালী পূবালী ব্যাংক শাখার জুনিয়র সহকারী ডেভেলপমেন্ট কর্মকর্তা বিপ্লব চন্দ্র মিস্ত্রী বাড়ি আসেন। এ সময় তার চাচা নৃত্য চন্দ্র মিস্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। তাই সে তার কাকি সরজিনি মিস্ত্রীর নিকট পুকুর ভরাটের কারণ জানতে চান। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাক বিতন্ডা শুরু হয়। স্ত্রীর সাথে ঝগড়ার খবর পেয়ে স্বামী নৃত্য চন্দ্র মিস্ত্রী দ্রুত বাড়ি আসেন। বাড়ি এসে স্ত্রীর সাথে ভাতিজা বিপ্লকে ঝগড়া করতে দেখে সে বাড়ীতে থাকা জিয়ন (জীন) গাছের ভারি ডাল দিয়ে আকস্মিক বিপ্লবের মাথায় আঘাত করেন। এ সময় বিপ্লব মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। বাড়ির অন্য লোক জন তাকে ধরে ঘরে তুলে নেন। এর কিছুক্ষণ পরই রাত ৮টার দিকে সে মারা যান।

পটুয়াখালী পূবালী ব্যাংকের এজিএম আমিনুল ইসলাম সকালে বিপ্লবের বাড়ি ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় তিনি জানান, পটুয়াখালী পূবালী ব্যাংকের সহকারী ডেভেলপমেন্ট কর্মকর্তা (এডিও) বিপ্লব চন্দ্র বৃহস্পতিবার অফিস শেষে বাড়ি আসেন। তার এ ঘটনায় পূবালী ব্যাংক পরিবার শোকাহত। তিনি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। এবং দোষীদের বিচার দাবি করেন। তালতলী থানার ওসি বাবুল আকতার জানান, বিল্পবের মৃত্যুর ঘটনায় তার ছোট ভাই দুলাল মিস্ত্রী বাদী হয়ে থানায় তার চাচা নৃত্য চন্দ্র মিস্ত্রী (৪৫), সনাক মিস্ত্রি (৩০), গনপতি (৩৫),পপি রানি (২৬) ও সরজিনী (৩৭)কে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলার প্রধান আসামি নৃত্য চন্দ্র মিস্ত্রি তার স্ত্রী সরজিনী মিস্ত্রী ও আরেক চাচা সনাক মিস্ত্রীকে বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্যে বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে।

(এমএইচ/পি/জুন ২৬, ২০১৫)