স্টাফ রিপোর্টার : স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন মামলায় একদিকের রিমান্ড শেষে বেসরকারি টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক রকিবুল ইসলাম ওরফে মুকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আজ রবিবার দুপুরে তাকে একদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে শনিবার ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মুকুলকে হাজির করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। থানার এসআই মাসুদ পারভেজ আদালতে মুকুলের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম অমিত কুমার দে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে মিরপুর থানার পুলিশ স্ত্রীর দায়েক করা নির্যাতন মামলায় মুকুলকে গ্রেপ্তার করে।

মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ পারভেজ বলেন, নারী নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগে করা মামলায় রকিবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার বাদী নাজনীন আখতার দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক।

গত বৃহস্পতিবার নাজনীন তাঁর স্বামী রকিবুল ও আরেকজন নারীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার আরেক আসামি হলেন মেহেরুন বিনতে ফেরদৌস।

এ ব্যাপারে নাজনীন আখতার বলেন, ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর একমাত্র মেয়ে চন্দ্রমুখী মারা যাওয়ার পর শোকে তিনি পাঁচতলা থেকে লাফ দিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হন। এরপর দীর্ঘদিন হাসপাতালে ছিলেন। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে আবার তাঁরা দুজন সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু এর মধ্যে রকিবুল মেহেরুন বিনতে ফেরদৌসের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।

এ নিয়ে কথা বললে স্বামী রকিবুল বিভিন্ন সময়ে নাজনীনকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। একবার রক্তাক্ত অবস্থায় সহকর্মীরা বাসা থেকে নাজনীনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এর কিছুদিন পর তাঁর দ্বিতীয় কন্যার জন্ম হয়। কিন্তু সন্তানের জন্মের পর থেকে কখনোই খোঁজ নিতেন না মুকুল।

এর মধ্যে নাজনীন খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁর স্বামী মেহেরুনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। মেহেরুনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময়ও স্ত্রীকে কয়েকবার নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেন নাজনীন।

নাজনীন অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময়ে রকিবুল তাঁর কাছ থেকে টাকাও নিয়েছেন। সর্বশেষ রাজউকে পূর্বাচলে বরাদ্দ পাওয়া একটি প্লটের কিস্তির জন্য তিনি ১৪ লাখ টাকা দেন রকিবুলকে। কিন্তু রকিবুল ওই প্লটটি নিজের নামে লিখে নেন এবং সম্প্রতি সেটা বিক্রিও করে দেন। এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করায় নাজনীনকে বিভিন্ন সময়ে রকিবুল নির্যাতন করেন।

এত দিন মামলা না করার বিষয়ে নাজনীন আখতার বলেন, সবার পরামর্শে ও সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তিনি এতোদিন মামলা করেননি। কিন্তু এখন বাধ্য হয়েই মামলা করলেন। তিনি তাঁর সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, এর ন্যায়বিচার দাবি করেন।

(ওএস/এএস/জুন ২৮, ২০১৫)