ঠাকুরগাও প্রতিনিধি :  গুদামে জায়গা সংকটের কারণে ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জে ২য় দফায় সরকারিভাবে গম ক্রয় অভিযান ভেস্তে গেছে। ৩০ জুনের মধ্যে প্রায় ২৯’শ মেঃ টন গম কেনার নির্দেশনা আসলে গুদামে জায়গা না থাকায় ১ ছটাক গমও কেনা হয়নি। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

এদিকে গম কেনার জন্য জায়গা না থাকলেও মিল মালিকদের কাছ থেকে ঠিকই চাল কেনা হচ্ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের। কৃষকরা বলছেন, মিল মালিকদের কাছে বেশি সুবিধা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা এ কাজ করেছেন। অবশ্য এ অভিযোগ স্বীকার করেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জে ২য় দফায় সরকারিভাবে ২৯’শ ১৫ মেঃ টন গম কেনা নির্দেশনা আসে। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে গম কেনার কথা ছিল। কিন্তু গুদামে জায়গা না থাকায় ১ ছটাক গমও কেনা হলো না কৃষকের কাছ থেকে। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা। এমনিতেই ধানের দাম কম তার পর, গম কেনা হলো না। সব মিলিয়ে কৃষকের মেরুদন্ড ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। খোজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে ২য় দফায় গম কেনা নির্দেশনা আসে। এতে অনিহা প্রকাশ করেন প্রশাসন। কৃষকের পক্ষ থেকে গম কেনার জন্য পিড়াপিড়ি শুরু হয়।

এরই মধ্যে সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বার্হী অফিসার এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার সরকারি সফরে বিদেশ চলে যান। যাওয়ার আগে কৃষকদের আশ্বস্ত করে যান, দেশে ফিরেই তিনি গম কিনবেন। ২৮ জুলাই তিনি দেশে ফিরেছেন। শেষ মুহুর্তে কৃষকরা যোগাযোগ করলে তিনি জানান, গুদামে জায়গা নেই, তাই গম কেনা সম্ভব হচ্ছে না। সূত্র জানায় খাদ্য কর্মকর্তাসহ ক্রয় কমিটির অন্যান্য সদস্যরা কৃষকের গম কেনার পক্ষে থাকলেও অজ্ঞাত কারণে তা সম্ভব হয়নি। এদিকে গুদামে জায়গা নেই, এ কথা বলা হলেও মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করা হচ্ছে ঠিকই। অভিযোগ রয়েছে, মিলারদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা পেয়েই কৃষকের গমের পরিবর্তে মিল মালিকের চাল কিনতেই বেশি আগ্রহী ক্রয় সংশ্লিষ্টরা। অথচ নির্দেশনা মোতাবেক কোন চালই সরবরাহ করছে না মিল মালিকরা।

মিল মালিকদের কাছ থেকে অপেক্ষাকৃত নিম্মমানের চাল সংগ্রহ করা হলেও কৃষকের ভালো গম সংগ্রহ করা হলো না। এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে কৃষক মহলে। কৃষক নেতারা জানান, সরকারী নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কৃষকের কাছ থেকে গম কেনা হলো না। এতে একদিকে যেমন কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হলো অন্যদিকে সরকারি উদ্দেশ্য ভেস্তে গেল। ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার জন্যই কৃষকের গম কেনা হলো না বলে তাদের দাবি । এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ক্রয় কমিটির সভাপতি এবিএম ইফতে খারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, গুদামে জায়গা নেই, তাছাড়া এই মুহুর্তে কৃষকের কাছে গম নেই।

সে কারণে ২য় দফায় গম কেনা সম্ভব হয়নি। খাদ্য কর্মকর্তা নুর ইসলাম জানান, ক্রয় কমিটির সভাপতি না চাইলে আমাদের করার কি আছে। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা তাইবুর রহমান বলেন, গুদামে জয়গার অভাব আছে ঠিকই। কিন্তু অভ্যন্তরীন মালামাল চলাচল প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না। উল্লেখ্য, গম ক্রয় মৌসুমের ১ম দফায় ৪ হাজার ৩৭২ মেঃ টন গম কিনতে গিয়ে প্রশাসনকে নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। এ কারণেই তারা ২য় দফায় গম কিনতে নারাজ ছিলেন প্রশাসন।

(জেএবি/পিবি/জুন ৩০,২০১৫)