বাগেরহাট প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে অবিরাম বৃষ্টি ও পূর্ণিমার প্রভাবে বাগেরহাট শহরের প্রধান-প্রধান সড়কসহ ৯টি উপজেলা উপজেলার কমপক্ষে ৫০টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ঘর-বাড়ি। একারণে দিনমজুরসহ সাধারণ মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার রাত থেকে অবিরাম বৃষ্টি ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে বাগেরহাট শহরের বিভিন্ন সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দোকানপাট। বাগেরহাট শহরের অধিকাংশ এলাকার বাসা-বাড়ি পানিমগ্ন হয়ে পড়েছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের বাগেরহাট- খুলনা পুরাতন সড়কের যাত্রাপুর ইউনিয়নের মুচি বাড়ির মোড়ের অংশটি মঙ্গলবার সন্ধায় ভৈরব নদীর পানির তোড়ে ভেঙ্গে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়িছে। বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরনের যানবাহন চলাচল। বুধবার বিকাল পর্যান্ত সড়ক বিভাগের কোন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যায়নি। মঙ্গলবার সন্ধায় সড়কটি মুচি বাড়ির মোড়ের অংশটি ভেঙ্গে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও বুধবার বিকাল পর্যান্ত তা জানেন না ওই সড়কের দায়িত্বে থাকা সেকশন কর্মকর্তা মো: কামরুজ্জামান। এই সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় জেলা শহরের সাথে সদরের দু’টি ইউনিয়নসহ ফকিরহাট ও মোল্লাহাট উপজেলার সাথে সহজ সড়ক যোগাযোগ মঙ্গলবার সন্ধা থেকে বন্ধ রয়েছে বলে জানান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান খান মুজিবর রহমান।

এছাড়া অবিরাম বৃষ্টি ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে বাগেরহাট সদর, কচুয়া, রামপল, মংলা, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারী. মোড়েলগঞ্জ ও শরনখোলা উপজেলার অধিকাংশ সড়কসহ বাড়ি-ঘর ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসহ কমপক্ষে ৫০টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চলের বড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ায় সাধারন মানুষের রান্না-বান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় শত শত ফিশিং ট্রলার সুন্দরবনসহ উপকূলীয় বিভিন্ন নদী ও খালে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে।

বাগেরহাট শহরের দোকানপাট ও সড়ক ছাড়াও প্লাবিত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে, খারদ্বার, বাসাবাটি,কৃষ্ণনগর, মুনিগঞ্জ, হড়িখালী নাগেরবাজার, গোবরদিয়া, কানজাহান পল্লী ও সোনাতলা। শহরে পর্যাপ্ত ড্রেন না থাকা ও প্রবাবশালীরা সরকারি খালগুলো দখল করায় শহরের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া বাগেরহাট সদরের রহিমাবদ,মরগা বাগমরা, চাপাতলা, যাত্রপুর, বারইপাড়া, হালিশহর, রাখালগাছি, খানপুর, বেমরতা, খালিশপুর, ফকিরহাটের বেতাগা, মাসকাটা, নিকলিপুর, পুটিয়া, গুড়গুড়িয়া, গেয়ালবাড়িসহ রামপাল, মংলা, কচুয়া, মোল্লাহাট, চিতলমারী, মোড়েলগঞ্জ ও শরনখোলা উপজেলার অধিকাংশ সরকারি খাল আটকে চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ চাষ করার ফলে অবিরাম বৃষ্টিপাত ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানি উঠে তলিয়ে গেছে বাগেরহাটে গ্রামের পর গ্রাম। ফলে এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ঘর-বাড়ি। এ কারণে সাধারণ মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ এলাকার ফেরদৌস হোসেন মুন্সী ও মজিবুর রহমান জানান, কেওড়া নদীর বেঁড়িবাঁধ না থাকায় কয়েকটি গ্রামে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় নিম্নআয়ের মানুষের নানান ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

(একে/এএস/জুলাই ০৮, ২০১৫)