মাগুরা থেকে দীপক চক্রবর্তী : মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী গ্রামের নার্সারী ব্যবসায়ী আতিয়ার রহমান ব্রুনাই থেকে আনা আমের কলম শায়ন ডাল তার বাগানের একটি আম গাছে গ্রাফটিং করে ৪কেজি ওজনের আম সৃষ্টি করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। আম দেখতে  প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে দলে-দলে লোক আসছে।

আতিয়ার মিয়ার বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ১বিঘা জমির ওপর আম, পেয়ারা, দেশীয় কমলা, মাল্টাসহ বিভিন্ন জাতের ফলের গাছসহ ফল ও ফুলের চারা। ধরে আছে আম্রপালি, মাল্টা, দেশীয় কমলা ও পেয়ারা। বাগানের মধ্য খানের ব্রুনাই জাতের একটি আমগাছে ১১টি আম ধরে আছে। পাকতে এখনও অনেক দেরি।

নতুন উদ্ভাবিত এ আম লম্বায় ১৩ ইঞ্চি, বেড় ১৮ইঞ্চি ও ওজন ৪কেজি। বাগানের মালিক আতিয়ার রহমান জানান, ছোটবেলা থেকেই আমার বিভিন্ন প্রকার ফল-ফুলের গাছের প্রতি ছিলো বেজায় ঝোঁক। লেখা পড়ার পাশাপাশি আমি বাড়ির আঙ্গীনায় আম,জাম,কাঁঠালসহ বিভিন্ন প্রকারের গাছের চারা রোপন করতাম। অনেকে আমাকে গেছো পাগল বলে ডাকতো। এক সময় লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে আমি কৃষি কাজে যোগ দিই। কিন্তু কৃষি কাজে উন্নতি করতে না পেরে ২০ বছর পূর্বে আমি বাড়ির সামনের একটা পতিত জমিতে বিভিন্ন প্রকারের ফল-ফুলের চারা তৈরী করি। পরবর্তীতে সেই চারা বাজার জাত করি। এতে প্রথম বছর অনেক টাকা উর্পাজন করি। সেই থেকে আমি নার্সারীর ব্যবসায় করে আসছি। আমার উৎপাদিত আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারাসহ বিভিন্ন প্রকার ফলদ বৃক্ষের চারা দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী হয়।

বর্তমানে ৬ বিঘা জমির উপর আমার নার্সারীর রয়েছে। এটাকে আমি আমার একটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছি। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নতুন উদ্ভাবিত ফলের কলম বা শায়নডাল এনে সেই জাতের গাছ তৈরির প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন তার প্রতিবেশী ইব্রাহীম নামের এক ব্যক্তি ব্রুনাইতে চাকুরী করেন। তিনি ছুটিতে বাড়ি আসার সময় আমের শায়ন ডাল সঙ্গে নিয়ে এসে তার বাড়ির একটি গাছে গ্রাফটিং করেন। ২ বছর পর ওই গাছে দেড় কেজি ২ কেজি ওজনের ৫টি আম ধরে। আমি একদিন বেড়াতে গিয়ে এ ধরনের আম দেখতে পেয়ে ওই গাছ থেকে শায়ন ডাল সংগ্রহ করে আমার নার্সারীর একটি ফজলি আম গাছে গ্রাফটিং করি আজ থেকে ৪ বছর পূর্বে। এ নতুন জাতের গাছে গত বছর দুটি আম ধরেছিলো। এ বছর ধরেছে১১টি আম। এ আম দেখতে প্রতিদিন দলে-দলে লোক আসছে। এ নতুন জাতের উদ্ভাবিত চারা আমি স্বল্প সময়েই বাজারজাত করতে সক্ষম হবো বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

(ডিসি/এএস/জুলাই ১৩, ২০১৫)