আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আসন্ন ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে বরিশালে সক্রিয় হয়ে উঠেছে শতাধিক পেশাদার ছিনতাইকারী। তাদের দলে রয়েছে একাধিক নারী সদস্য। এরা একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে নগরীর বিভিন্নস্থানে তৎপর রয়েছে। এসব গ্রুপে বাহির থেকেও ভাড়াটে পেশাদার ছিনতাইকারীদের আনা হয়েছে। তৎপর হয়ে ওঠা ছিনতাইকারীদের তিনটি গ্র“পের এক নারীসহ বেশ কয়েকজন সদস্যকে ইতোমধ্যে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বরিশাল মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছিনতাইকারীদের নেতৃত্বে থাকা দুর্ধর্ষ অর্ধশতাধিক অপরাধীর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এদের গ্রেফতারের জন্য ডিবি পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ডিবি পুলিশের তালিকা সূত্রে জানা গেছে, অর্ধশতাধিক ছিনতাইকারীর মধ্যে গ্রুপ-উপগ্রুপ মিলিয়ে রয়েছে প্রায় শতাধিক ছিনতাইকারী।

এসব ছিনতাইকারী চক্রের বসবাস নগরীতেই। তবে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি চক্র আবার শহরের উপকন্ঠে বাণিজ্যিক স্থলগুলোতেও সক্রিয় রয়েছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, এসব চক্রের সদস্যরা ছিনতাই করার পরপরই স্থান বদল করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কিছুতেই তাদের লাগাম টেনে ধরতে পারছেন না। চিহ্নিত ছিনতাইকারীরা অধিকাংশ ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকলেও এখন পর্যন্ত তারা রয়েছে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

সূত্র মতে, ঈদকে টার্গেট করে এবার ছিনতাইকারী চক্রটি নিরাপদ ঘাঁটি হিসেবে নগরীর চকবাজার, গীর্জা মহল্লা, সদর রোডসহ বেশ কিছু এলাকাকে বেঁছে নিয়েছে। পাশাপাশি উপগ্রুপের সদস্যরা জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলায় ছিনতাইয়ের জন্য সক্রিয় রয়েছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভয়ঙ্কর ছিনতাইকারীর তালিকায় থাকা নগরীর বেলতলা এলাকার সুমন, ভাটিখানার মহসিন, সোহেল, অন্তর এবং রূপাতলী এলাকার শাহিনসহ অর্ধশতাধিক দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারীর তালিকা নিয়ে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাশপাশি এ তালিকায় বেশ কয়েকজন নারী ছিনতাইকারীর নামও রয়েছে। ইতোমধ্যে গত বৃহস্পতিবার নগরীর চকবাজার এলাকায় ছিনতাইকালে রুমা (২২) নামের এক নারী ছিনতাইকারীকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত রুমা জানায়, এবারের ঈদকে টার্গেট করে তাদের এ চক্রে ২৫জন সদস্য কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে নিরাপদ দুরত্বে থাকতে তারা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মাঠে নেমেছেন। এরআগেও ওই নারী (রুমা) ছিনতাইয়ের ঘটনায় জেলার বাহিরে একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিলো বলেও স্বীকার করেন। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করার পর টাকার বিনিময়ে তাদের মেট্রো আইনে আদালতে সোর্পদ করা হয়।

যে কারণে সামান্য কিছু জরিমানা বা ২/৪দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়ে ফের সক্রিয় হয়ে পড়েন ছিনতাই কর্মকান্ডে। যদিও এসব অভিযোগ পুলিশের পক্ষ থেকে সব সময়েই অস্বীকার করা হয়।
এ ব্যাপারে মহানগর পুলিশের সহকারি পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. আনছার উদ্দিন বলেন, তালিকাভূক্ত ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারের জন্য সম্ভাব্য সবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ছিনতাই ঠেঁকাতে ও ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারের জন্য নগরীর বাণিজ্যিক এলাকাসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ২২টি পয়েন্ট নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি সাদাপোশাকে পুলিশ সদস্যরা কড়া নজরদারিতে রয়েছেন।

(টিবি/এএস/জুলাই ১৩, ২০১৫)