আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি : বরিশালের গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-গোপালগঞ্জ মহাসড়ক নির্মাণের এক বছরের মধ্যেই সড়কে বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে ছোট-বড় গর্তসহ মহাসড়কের পার্শ্ব ভেঙ্গে যানবাহন চলাচলে চরম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ঈদে ঘর মুখো মানুষেরা পড়ছে বিপাকে।

সওজ বিভাগ মহাসড়কটি কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করলেও ভারী বর্ষণে তা আবার ভেঙ্গে যাচ্ছে।

বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৎকালীন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র হস্তক্ষেপে গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-গোপালগঞ্জ সড়কটি মহাসড়কে উন্নীত করা হয়। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এলে রাজনৈতিক প্রকল্প দেখিয়ে তা বাতিল করে তারা। বরাদ্দকৃত অর্থ নেয়া হয় অন্য প্রকল্পে। ফলে মহাসড়কের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

মহাজোট সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালে বরিশালের গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-পয়সারহাট মহাসড়ক নির্মাণের জন্য পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে। এডিপি’র অর্থায়নে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১টি কালভার্টসহ গৌরনদী থেকে আগৈলঝাড়া সদর পর্যন্ত ৮.২০ কিলোমিটার মহাসড়কের নির্মাণ কার্যাদেশ দেয়া হয় বরিশালের ওটিবিএল নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে।

অন্যদিকে ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি কালভার্ট ও ১টি ব্রিজসহ আগৈলঝাড়া উপজেলা সদর থেকে পয়সারহাট পর্যন্ত ৭.৬ কিলোমিটার মহাসড়কের অপর কার্যাদেশ দেয়া হয় ফরিদপুরের সেগুইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে।

প্রায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ২৬ ফুট প্রস্থ সড়ক, চওড়ার উভয় পাশে ৩ ফুট করে ফুটপাত, সড়কে ৮টি কালভার্ট, ১টি ব্রিজ নিমাণের জন্য ওই দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দু’টি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দু'দফায় সময় বাড়ালেও এক বছর পূর্বে মহাসড়কের কাজ শেষ করে।

কংক্রিট ম্যাকাডম আর রোলার ব্যবহার না করা, মহাসড়কে ঢাল না দেয়া ও নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় বছর না ঘুরতেই ওই সড়কের বিভিন্ন স্থনে কাপেটিং উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৫০টি জায়গায় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এক সপ্তাহ পর্যন্ত সমস্ত যানবাহন চলাচল ছিল বন্ধ।

নিম্নমানের কাজের ফলে মহাসড়কের দু-পাশ ভেঙ্গে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে এ মহাসড়কটির। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

এ ব্যাপারে সওজ উপ-সহকারী প্রকৌশলী আ. মোতালেব মিয়া বলেন, মহাসড়কের কাজ করার সময় কালভার্টের কাজ শেষ না হওয়ায় রোডে ভারী রোলার দিয়ে সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তাই মহাসড়কের কাপেটিংয়ে কিছু সমস্যা হতে পারে। তবে আমরা সাথে সাথে তার সংস্কার করছি।

(টিবি/পিএস/জুলাই ১৫, ২০১৫)