প্রবীর সিকদার : ২০০১ সালে রাজাকারের বোমা গুলি চাপাতির নৃশংস হামলার পরও মরতে মরতে বেঁচেছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, দেশে বিদেশে চিকিৎসা করিয়ে বাঁচিয়েছিলেন। যদিও আমাকে হারাতে হয়েছে শরীরের প্রায় অর্ধেক অংশ; আমৃত্যু বয়ে বেড়াতে হবে বোমার অসংখ্য যন্ত্রণাদায়ক স্প্লিনটার। তারপরও কি থেমে আছে হুমকি !

ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক দুর্ধর্ষ যুদ্ধাপরাধী রাজাকার মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের দেখে নেওয়ার হুমকি নিয়ত বয়ে বেড়াই। আগুনে পুড়িয়ে হত্যার হুমকির মুখে কয়েক মাস আগে ঢাকার শেরে বাংলা নগর থানায় অভিযোগ করেছিলাম। আমার জীবনের কি ই বা এমন দাম যে পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে তা খতিয়ে দেখবে! অতি সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে দুর্দান্ত একজন প্রভাবশালীর হুমকি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গেলে তো পুলিশ আমাকেই জেলে ঢোকাবে! এরই মধ্যে ধনকুবের নামে পরিচিত এক দুর্ধর্ষ রাজাকার কোলকাতার এক সাংবাদিককে টাকা দিয়ে তার পক্ষে 'ঐতিহাসিক' সব সাফাই লিখিয়ে দেশে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছে। ওই নোংরা লেখায় বঙ্গবন্ধুর সাথে তুলনা করা হয়েছে ওই দুর্ধর্ষ রাজাকারের! কতো সহ্য হয়, ধৈর্যেরও তো একটি সীমা থাকে !

২০০১ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত ওই রাজাকারের একাত্তরের ইতিবৃত্ত সকল পাঠকের অবগতির জন্য ফের তুলে ধরেছি আমার অনলাইন নিউজ পোর্টাল উত্তরাধিকার ৭১ নিউজে।

আবার শুরু হুমকি ! কয়েকবার তো মরতে মরতে বেঁচেছি, এবার বুঝি রক্ষা নেই! কার কাছে যাবো ! কে আমার নিরাপত্তা দিবে ! কে আমার নিরাপত্তা নিয়ে ভাববে !

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাবা কাকা দাদুসহ পরিবারের অনেককেই হারিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করতে নেমে হারিয়েছি নিজের শরীরের অর্ধেক। ওই চেতনা-স্বপ্ন ধারণ করার অপরাধে নিশ্চিহ্ন হবে আমার শরীরের বাকি অর্ধেক, এই তো ! তৈরি আছি। প্রিয় পাঠক, দোয়া করবেন আমার স্ত্রী সন্তানদের জন্য। কখনো কোনও অপরাধ করে থাকলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। দুর্বিষহ যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুই হয়তো আমার জন্য গৌরবের!

জয় বাংলা।