মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর সদর উপজেলার ২নং শকুনী এলাকায় হাবিবা আক্তার নামের এক গৃহবধূ তার শ্বশুর ডা. মাহাবুব রহমান সেলিম ও শাশুড়ি মাহমুদা খাতুন মহুয়ার নির্যাতনের শিকার হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। গরীবের মেয়ে হওয়ায় বিয়ের ৬ মাস যেতেই ছেলেকে আবার বিয়ে দিয়ে ঐ গৃহবধুকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে বলে পারিবারিকভাবে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পারিবারিক, স্থানীয়, হাসপাতাল ও ভূক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার হাজির হাওলা গ্রামের আওলিয়া বাড়ির রিক্সা চালক বাদল হাওলাদারের মেয়ে হাবিবা আক্তারের (১৯) সাথে একই উপজেলার ২নং শকুনী এলাকার মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের চিকিৎসক মাহাবুব রহমান সেলিমের ছেলে আকিবুল রহমান আকিবের (২৪) প্রেমের সর্ম্পক হয়।

হাবিবা আক্তারের মা রহিমা বেগম ঐ ডাক্তারের বাড়িতে গৃহপরিচালিকার কাজ করার সুবাদে দু’জনের মধ্যে এই প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। প্রায় ৬ মাস আগে স্থানীয়রা মিলে ওদের দুজনের বিয়ে দেয়। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাবিবাকে নানাভাবে অত্যাচার করে আসছিলো। তালাক দেয়ার জন্য ছেলেকে চাপ দিতে থাকে।

গৃহবধূ হাবিবা আক্তার রবিবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, আকিবের বাবা-মা জোর করে ছেলেকে দিয়ে তালাকনামায় স্বাক্ষর নেয়। আমাকেও তালাকে স্বাক্ষর দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি স্বাক্ষর দেইনি। আমি গরীবের মেয়ে বলে ওরা আমাকে মেনে নিতে পারছেনা। বিয়ের ছয় মাস যেতে না যেতেই গোপণে আকিবকে আবার তারা বিয়ে করায়। আমি এই ব্যাপারটি জানতে পেরে আমার শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে জিজ্ঞেস করলে ওরা শুক্রবার রাতে আমাকে অনেক মারধর করে। মারধরের এক পর্যায় আমি জ্ঞান হারালে ওরা আমাকে রাস্তায় ফেলে রাখে। এসময় স্থানীয়রা আমাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে বাড়িতে খবর দেয় এবং হাসপাতালে ভর্তি করে। আমি আমার স্বামীর কাছে ফিরে যেতে চাই। আর আমার এই নির্যাতনের বিচার চাই। তারা বড়লোক, ডাক্তার। তাই আমি জানিনা এর বিচার পাবো কিনা।

গৃহবধূর মা রহিমা বেগম বলেন, নির্যাতনের বিচার চেয়ে মাদারীপুর লিগাল এইড এসোসিয়েশনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমি গরীব মানুষ। কিন্তু আমাদেরও সম্মান আছে। আমরা এর বিচার চাই। তবে কতটুকু বিচার পাবো জানিনা।
চিকিৎসক মাহাবুব রহমান সেলিমকে মোবাইলে ফোন দিয়ে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ওটিতে আছি। পরে কথা বলবো।

আকিবুল রহমান আকিবকে ফোন দেয়া হলে সে ফোন রিসিভ করেনি।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এএসএ/এএস/জুলাই ২৬, ২০১৫)