বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনার বেতাগীতে ২৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দফতরী কাম নৈশ প্রহরী (এমএলএসএস) নিয়োগে শাসক দলের প্রভাবশালী নেতা,স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের বিরুদ্ধে অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। চাকরী পাওয়ার আশায় ভোটার আইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন সনদ ও শিক্ষাগত যোগ্যতা জাল এবং গড়মিল করে আবেদন করারও আভাস মিলেছে।

নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত না হওয়ায় ১ জন প্রধান শিক্ষক ও ২জন সভাপতিকে ইতোমধ্যে কারণ দর্শনো হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে তোলপাড় চলেেছ।টাকা দিয়েও তালিকায় প্রথমদিকে নাম নেই শুনে অনেককে অসুস্থ হয়ে উঠার খবর পাওয়া গেছে। প্রত্যেক পদের বিপরীতে পছন্দের প্রার্থীর কাছ থেকে ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নিয়ে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। আর এ সূযোগে চাকরী বাগিয়ে নিচ্ছে সব অযোগ্য প্রার্থী এমনই একাধিক অভিযোগ রয়েছে।বঞ্চিতদের অভিযোগ ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা,সহকারী শিক্ষা অফিসার ও ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশে সংশ্লিষ্ট মহল প্রায় ৭২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ বিষয় ভুক্তভোগীদের পক্ষথেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুএে জানা গেছে, চলতি বছরে বেতাগী উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৪ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১জন করে দফতরী কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।প্রথম ধাপের ২৪ টি বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া গত জুন মাসে শেষ হয়।এবছরেও নিয়োগ প্রক্রিয়া ৩ মে‘র মধ্যে শেষ হবে।এর মধ্যে বেতাগী পৌর সভায় ২টি,বিবিচিনি ইউনিয়নে ৬টি,সদর ইউনিয়নে ৩টি,হোসনাবাদ ইউনিয়নে ১টি,মোকামিয়া ইউনিয়নে ২ টি,বুড়ামজুমদার ইউনিয়নে ৪টি,কাজিরাবাদ ইউনিয়নে ৩টি ও সড়িষামুড়ি ইউনিয়নে ৩টি করে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।তবে কমিটি সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় ৪টি বিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে এবং নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত না হওয়ায় ফুলতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, পুর্ব কাজিরাবাদ ও সড়িষামুড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতিকে কারন দর্শনো হয়।বাছাই কাজ সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্টদের নিকট তালিকা প্রেরন করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে,নিয়োগ নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যর আত্মীয়, আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা,স্কুল পরিচালনা কমিটি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ব্যাপক অর্থ বানিজ্যে মেতে উঠেছে।প্রত্যেক পদের বীপরীতে ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।নিয়োগ বানিজ্যের দলীয় ভাবে আদায়কৃত অর্থ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী নেতাদের মাঝে বন্টনের জন্য আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী নেতার নিকট জমা রাখা হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একাধিক নেতা জানিয়েছেন।এ ছাড়াও ঝিংগা বাড়িয়া,ফুলতলা সরকারি প্রা.বি.সহ আরও একাধিক প্রতিষ্ঠানে ভোটার আইডি কার্ড,জন্ম নিবন্ধন সনদ জাল করে আবেদন করার অভিযোগ রয়েছে।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম ও মো. গোলাম রহমান তাদের বিরুদ্ধে অর্থবানিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মেধা অনুযায়ী তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদার জানান,তিনিও নানা ধরনের অভিযোগ পেয়েছেন।তবে কাজটি স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করার জন্য অভিযোগগুলোর তদন্ত করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
(এমএইচ/এএস/মে ২১, ২০১৪)