বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের চিতলমারীতে ভয়াবহ আকারে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া। বর্তমানে হাসপাতালেও জায়গা মিলছেনা রোগীদের।

এ অবস্থায় অসংখ্য রোগীকে হাসপাতালের মেঝে ও গাছ তলায় রাখা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে চিকিৎসা বঞ্চিত সাধারণ রোগীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা।

আগত রোগী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে এলাকায় ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া। প্রতিদিন অগনিত ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি হচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। যাদের অধিকাংশ শিশু ও নারী। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক ও নার্স সংকট থাকার কারণে বর্তমানে রোগীদের জীবন-মরণ সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেককেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে চিকিৎসকের অপেক্ষায় বসে থাকতে দেখা গেছে। অনেকের নিথর দেহ পড়ে আছে হাসপাতালের মেঝেতে তবু সাক্ষাৎ মিলছেনা চিকিৎসকের।

বুধবার দুপুর পর্যন্ত ডায়রিয়া রোগীই ছিলা অর্ধশতাধিক। এ সময় কর্তব্যরত এক নার্সকে এসব রোগীদের সামলাতে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। তার সাথে এক বহিরাগত এক ব্যক্তিকে সহযোগীতা করতে দেখা গেছে। উপজেলার হিজলা গ্রামের পান্না মোল্লা জানান, গত দু’দিন আগে তার দু’ বছরের শিশুকন্যা জোহারা ও হাজারাকে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত অবস্থায় এখানে ভর্তি করেছেন, এখনো তাদের শারিরিক কোন পরিবর্তন আসেনি।

চোখের সামনে সন্তানের এমন দৃশ্য আর দেখা যায় না। ডাক্তার-নার্সদের কোন সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না বলেও তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন। এ সময় জেসমিন(১২), হোসেন (১৬), হাবিবুর (১), জুঁই(৬), ঝর্ণা (৪), এনিহা(২), খয়রুল(১২)সহ প্রায় অর্ধশতাধিক ডাইরিয়া রেগীকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

স্থানীয় আড়–য়াবর্নি গ্রামের নূরইসলাম খান জানান, একজন নার্স ও এক সময়ের এক ভ্যানচালককে সহযোগী হয়ে চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে। তিনি সকাল ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এক রোগীকে নিয়ে বসে আছেন। বার বার নার্স ও সিকিৎসকের কাছে গিয়েও সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না। চরম হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

এ সময় কর্তব্যরত নার্স জাহানারা বেগম জানান, তাকে একাকে সামলাতে হচ্ছে পুরো হাসপাতাল। তিনি একা কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তার একার পক্ষে এত সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে বলেও তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আব্দুর শাকুর জানান, কিছুই করার নেই আমাদের। চরম লোকবল সংকট । বর্তমানে ১৪ জন নার্স ও চিকিৎসকের মধ্যে ৩জন উপস্থিত আছেন। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি চিকিৎসা দেওয়ার।
জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মো. বাকির হোসেন জানান, আমাদের চেষ্টায় কোন কমতি নেই। লোকবল সংকটের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ঠিকমত সেবা দিতে পারছি না। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।

(একে/এটি/মে ২১, ২০১৪)