সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :দেশের ১০টি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনিষ্টিটিউট (টি ভি আই) এর শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারিরা পাঁচমাস ধরে বেতন ভাতা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করছে।

সংশ্লিষ্ট ও শিক্ষকদের সূত্র থেকে জানা গেছে, ২০০৬ সালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে বস্ত্র দপ্তর “১০টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনষ্টিটিউট (টি.ভি.আই) শীর্ষক স্থাপন প্রকল্প” এর আওতায় সিরাজগঞ্জ, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও গাইবান্ধা জেলায় ১০টি টি.ভি.আই স্থাপন করা হয়। প্রকল্পর মেয়াদ প্রথম পর্যায়ে আড়াই বছর নির্ধারিত করা হয়। পরবর্তিতে ধাপে ধাপে মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০১৪ সালের জুনমাস পর্যন্ত প্রকল্পটি সফল ভাবে সমাপ্ত হয়। ওই বছরেই মেয়াদ শেষ হওয়ায় সকল পদ সমূহ রাজস্ব খাতে সৃজন না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান জনবল দিয়েই উক্ত প্রতিষ্ঠান গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম অবহ্যত রাখার জন্য সংশিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি হয়। এই প্রকল্পের আওতায় প্রতিষ্ঠান গুলোতে নিজস্ব জায়গায় অত্যাধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ করে শতভাগ শিক্ষা উপকরণের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে।

প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ সহস্রাধীক শিক্ষার্থী সফল ভাবে কৃতকার্য হয়েছে। অনেকেই এখান থেকে উত্তির্ণ হওয়ারপর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। ১০টি প্রতিষ্ঠানের ১৫১জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ প্রকল্পের মাধ্যমে সাকূল্য বেতনে নিয়োগকৃত হওয়ায় কর্মরত জনবল প্রায় ১০ বছর চাকুরি করার পরও তাদের মূল বেতন স্কেলের কোন পরিবর্তন হয়নি। একই সঙ্গে চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে।

নাম প্রকাশ করার না শর্তে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারিরা বলেন, প্রকল্পের ডি.পি.পি তে সু-স্পষ্ট উল্লেখ ছিল এটি শিক্ষা প্রকল্প হওয়ায় কর্মরত জনবল স্কেল ভিত্তিক বেতন-ভাতাদি পাওয়ার যোগ্য, যা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এই প্রকল্পের বার বার মেয়াদ বৃদ্ধির ফলে অধিকাংশ জনবলের চাকুরির বয়সসীমা ইতিমধ্যে অতিক্রম করেছে। সফল ভাবে সমাপ্ত ১০টি (টি.ভি.আই) এর শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শ্রেষ্ঠ সময়, মেধা, শ্রম এখানে বিনিয়োগ করলেও রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

গত ৫ মাস ধরে আমাদের বেতনসহ সকলপ্রকার ভাতাদি বন্ধ আছে। বিগত ঈদুল ফিতরেও বেতন ভাতাদি পাওয়া যায়নি। আমরা খেয়ে না খেয়ে জীবন যাপন করছি। অথচ দেখার কেউ নেই। বর্তমানে কর্মরত জনবলের বেতন ভাতাদি নিয়মিত করণসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়ের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ ইসমাইল হোসেন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে জানান, সারা দেশের ৪০টি টিভিআই এর মধ্যে অধিকাংশই রাজস্ব ভুক্ত হয়েছে। শুধুমাত্র “১০ টিভিআই শীর্ষক প্রকল্প” বাকি রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও এদের বেতন থোক বরাদ্ব থেকে পরিশোধ করা হয়ে থাকে। বরাদ্ব না পাওয়ায় বেতন ভাতা প্রদান করা হয়নি। তবে এদেরকে রাজস্বভুক্ত করার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। অচিরেই হয়ে যাবে।


(এসএস/এসসি/আগষ্ট০৮,২০১৫)