গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) চাকুরি মেলা-২০১৫ রবিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্র কৌশল বিভাগ তাদের সদ্য পাশ করা ১২০ জন ছাত্রের জন্যে টেক্সটাইল ওয়ার্কশপ ভবনে প্রথম বারের মত একদিনের এ মেলার আয়েজন করে।

জব ফেয়ারে যন্ত্র কৌশল বিভাগের ছাত্রদের পরিচালিত বিভিন্ন নতুন নতুন উদ্ভাবনও প্রদর্শন করা হয়।

বসুন্ধুরা গ্রুপ, আজিক গ্রুপ, র‌্যাংস গ্রুপ, অরিয়ন গ্রুপ, আনোয়ার গ্রুপ, ডিবিএল গ্রুপ, একমি গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, প্রাণ আরএফএল গ্রুপ, নোমান গ্রুপ, বেঙ্গল গ্রুপ, এসিআই, স্কয়ার টেক্সটাইল, এনার্জি প্যাকসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় ২২টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়।

সকালে মেলার উদ্বোধন করে ডুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ইন্ডাষ্ট্রিগুলোতে অনেক নতুন নতুন টেকনোলজি থাকে, যা সব সময় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের থাকে না। এ ধরনের মেলার মাধ্যমে ইন্ডাষ্ট্রির সাথে বিশ্বাবদ্যালয়ের কারিগরি সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে জব মার্কেট কি ধরনের গ্রাজুয়েট চাচ্ছে, তার আলোকে আমরা কোর্স কারিকুলামকে ঢেলে সাজাতে পারি।

তিনি আরো বলেন, ইন্ডাস্ট্রিগুলোও আমাদের কারিগরি সহায়তা নিয়ে নানা ধরনের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জব ফেয়ার ২০১৫ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুজ্জামান, যন্ত্র কৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. হাসান মোহাম্মদ মোস্তফা আফরোজ, বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরীসহ বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালকবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগের আউটগোয়িং ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন।

মেলায় বসুন্ধরার স্টলে চাকুরি প্রত্যাশিদের ভীড় ছিল লক্ষনীয়। স্টলে কথা হয় বসুন্ধরা গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার (মানব সম্পদ ও প্রশাসন) আতিক উজ জামান খানের সাথে। তিনি জানান, বসুন্ধরার সিমেন্ট, ফুড এন্ড বেভারেজ, পেপার, স্টীলসহ বিভিন্ন ইউনিটে যন্ত্রকৌশল বিভাগে কর্মীর প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ ধরনের ফেয়ারের মাধ্যমে কর্মী বাছাই নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে সদ্য পাশ করা এসব প্রকৌশলীরা একবারেই ফ্রেশ। তাদের কাজ শেখার এবং করার আগ্রহ অনেক বেশী। তাই তাদের দ্রুত দক্ষতার সাথে উপযুক্ত ভাবে গড়েও তোলা যায়। তাছাড়া একত্রে অধিক সংখ্যক প্রার্থীও পাওয়া যায়। তাই মেলায় চাকুরি প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে একটি প্যানেল তৈরী করে প্রয়োজন মাফিক কর্মীদের নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। মেলা চলা কালে বেলা ২ টা পর্যন্ত তারা ২৫ জন চাকুরি প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত সাংক্ষাতকার গ্রহণ করেছেন।

বেঙ্গল গ্রুপের সহকারী ম্যানেজার (মানব সম্পদ ও প্রশাসন) মো. মেজবাউল আলম জানান, আমাদের সারা বছরই লোক নিয়োগ করতে হয়। এ ধরনের মেলা থেকে নিয়োগ করা হলে ছাত্র, শিক্ষকদের সাথে সরাসরি সম্পর্ক তৈরী হয়। রেফারেন্স বা অন্য প্রয়োজনের দিক থেকেও নিরাপদ থাকা যায়। আবার যখন প্রয়োজন হয়, শিক্ষকদের মাধ্যমে ভাল মানের কর্মী পাওয়া যায়। তাই এধরনের মেলা অত্যন্ত গুরুর্ত্বপূর্ণ।

চাকুরি প্রার্থী আসলামুল হক বলেন, যেখানে চাকুরির জন্যে আমাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়, সেখানে প্রতিষ্ঠান গুলোই প্রার্থী নিয়োগ করতে এসেছে। এটি নিঃসন্দেহে ভাল উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠানগুলোও চাকুরি প্রত্যাশিদের লেখাপড়া ছাড়াও নানা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষকদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

অপর চাকুরি প্রত্যাশি তৌহিদুল আলম বলেন, মেলায় বসুন্ধরার মত তারকা প্রতিষ্ঠানসহ একই সাথে দেশের শীর্ষস্থানীয় ২২টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। আমরা একই দিনে ওই ২২টি প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের বায়োডাটা এবং অর্জিত শিক্ষা তুলে ধরতে পেরেছি। এতে সময় এবং অর্থ খরচ বেঁচে গেছে বলে আমরা অনেক খুশি।

জব ফেয়ারের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, আমার আশা করছি এই জব ফেয়ারের মাধ্যমে ১২০ জন গ্রাজুয়েটই তাদের দক্ষতা প্রদর্শনপূর্বক চাকরি অর্জন করতে পারবে।

(এসএএস/এলপিবি/আগস্ট ১৬, ২০১৫)