শরীয়তপুর প্রতিনিধি :শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিকে নগর ইউনিয়নের কদমআলী মাদবর কান্দি গ্রামের বাহারাইন প্রবাসি জামাল মাদবর (৩৫) কে গতকাল গভীর রাতে ঘরের ভিতরে ঢুকে ধারালো অস্ত্রের উপর্যপুরি ৯টি আঘাতে খুন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জাজিরা থানার পুলিশ নিহত জামাল মাদবরের স্ত্রী মুক্তা বেগম ও হত্যান্ডে জড়িত সন্দেহে দেলোয়ার মোড়ল নামে এক যুবককে আটক করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। জাজিরা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নিহতের পরিবার ও জাজিরা থানা সূত্রে জানা গেছে, বিকে নগর কদম আলী মাদবরেরকান্দি গ্রামে আমজাদ হোসেন মাদবরের ছোট ছেলে জামাল মাদবর প্রায় ১২ বছর যাবৎ বাহরাইনে প্রবাসী ছিল। ৭ বছর আগে পার্শবর্তি পূর্ব নাওডোবা মোড়লকান্দি গ্রামের আজাহার মোড়লের মেয়ে মুক্তা আক্তারের সাথে জামালের বিয়ে হয়। বিয়ের পর জামাল আবার বিদেশে চলে যায়। মাঝে মাঝে ছুটিতে দেশে আসতো। তাদের মুন্না নামে ৬ বছর বয়সের একজন পূত্র এবং জ্যোতি নামের ৪ বছর বয়সের একজন কন্যা সন্তান রয়েছে। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৩ বছর আগে থেকে মোড়লকান্দি গ্রামের নুরাই মোড়লের পূত্র দেলোয়ার মোড়লের সাথে মুক্তার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

এ ব্যাপারে মুক্তাকে বার বার সাবধান করা হলেও সে সংযত হয়নি। গত তিন মাস আগে জামাল মাদবর বাহরাইন থেকে ফিরে এসে ঢাকার সোয়ারীঘাট কামালবাগ এলাকায় পলিথিন ফ্যাক্টরি দিয়ে ব্যবসা শুরু করে। গত শনিবার রাতে জামাল বাড়ি আসে। রবিবার রাত ২টার দিকে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে বাইরে যায়। এরপর স্ত্রী ঘরের দরজা বন্ধ না করে শুয়ে পরে। জামাল ঘুমিয়ে গেলে রাত ৩টার দিকে জামালকে ঘুমন্ত অসস্থায় ঘরে ঢুকে কোপাতে থাকে। বুকে পেটেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের ৯ আঘাত করে। জামালের চিৎকারে তার অপর ভাইয়েরা এগিয়ে এলেও স্ত্রী মুক্তা এসময় নির্বাক থাকে। পরিবারের সদস্যরা জামালকে গভীর রাতে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করলে পথেই সে মারা যায়।

জামাল মাদবরের মেজ ভাই দানেশ মাদবর বলেন, আমরা চার ভাইয়ের মধ্যে জামাল ছিল সবার ছোট। জামাল ১২-১৩ আগে থেকে বাহরাইন থাকতো। বাহরাইন থাকার সময় জামালের স্ত্রী মুক্তা বেগম পার্শ্ববতী পূর্ব নাওডোবা এলাকার দেলোয়ার মোড়লের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। দেলোয়ার মোড়ল মাঝে মধ্যে মুক্তার বাসায় যাতায়ত করতো। এ নিয়ে আমাদের পরিবারের মধ্যে মুক্তা বেগমের পরিবারের মধ্যে টানা পোড়ন চলছিল। আমরা নিষেধ করলেও মুক্তা শোনেনি। জামাল তার ২টি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বেশী কিছু বলতোনা। আমার ভাই নীরব থাকতো এটাই ছিল তার অপরাধ। আমার নিরাপরাধ ভাইকে মুক্তা তার প্রেমিককে দিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এই খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

জাজিরা থানার ওসি মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। সন্দেহাতীত ভাবে নিহত জামালের স্ত্রী মুক্তা ও দেলোয়ার মোড়ল কে আটক থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।



(কেএনআই/এসসি/আগষ্ট ১৭,২০১