ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠিতে নূর সল্ট ইন্ডা: লিঃ নামে লবন মিলের মালিকানা নিয়ে দীর্ঘ দিন দ্বন্দ্বের পর এবার প্রকাশ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুটি মিল মালিকসহ ৫ জন আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার ১২টায় শহরের শীতলাখোলা রোডে বিসিক অফিস চত্বরে দুপক্ষের সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে পুলিশ অভিযানে চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন কালে দুজনকে আটক করা হয়েছে। আহতদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এ মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ছালেক শরীফ বিকেল সাড়ে ৪টায় তার ব্যবসায়ীক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শহরের নুর সল্ট ইন্ডাস্ট্রির মালিকানা নিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ ছালেক শরীফ ও ব্যবসায়ী মোঃ ফজলূল হক হাওলাদারের মধ্যে মালিকনা নিয়ে নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ দ্বন্দ্ব চলে আসছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) ঝালকাঠির কার্যালয়ে মঙ্গলবার ১২টায় উভয় পক্ষ নিয়ে এক আলোচনায় বসে। আলোচনা শেষে উভয়পক্ষ বিসিক উপ ব্যবস্থাপক অসিম কুমার ঘোষ কক্ষের সম্মুখে বের হলে সামনে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ফজলুল হক হাওলাদার ম্যানেজার মনির ব্যবসায়ী মোঃ ছালেক শরীফকে ধাক্কা দিলে সংঘর্ষে সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষে রূপালী ভান্ডারের মালিক ফজলুল হক হাওলাদার, ম্যানেজার অশোক ভট্টাচার্য, ক্যাশিয়ার রণজিৎ সমদ্দার, শরীফ সল্টের মালিক মোঃ ছালেক শরীফ ও তার পুত্র জামাল শরীফ আহত হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ফজলুল হক হাওলাদারের পুত্র রিয়াজুল ইসলাম সোনা (৩৫) ও পথচারী রাজিব হোসেন রাজুকে আটক করে। আহতদের মধ্যে শরীফ সল্টের জামাল শরীফ বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে এবং রূপালী ভান্ডারের মালিক ফজলুল হক হাওলাদার, ম্যানেজার অশোক ভট্টাচার্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এব্যাপারে আহত ফজলুল হক হাওলাদার বলেন, ‘মঙ্গলবার বিসিক উপ-ব্যবস্থাপক আমাদের দুই পক্ষকে তার কার্যালয়ে ডেকে আনেন। এরপর আলোচনার মাঝখানে শরীফ সল্টের মালিক সালেক শরীফ ও তার ছেলে জামাল শরীফ উপ-ব্যবস্থাপকের সামনেই তাদের অনুগামী লোকজন নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমি এবং আমার ছেলে আহত হই। বিসিক অফিসে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে তারা আড়ৎদ্দার পট্টিতে আমার নূর সল্টের গদি ভাঙচুর করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।

অপরদিকে বিকেল ৫ টায় আড়দ্দারপট্টিস্থ ব্যবসায়ীক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শরীফ সল্টের মালিক মোঃ ছালেক শরীফ। তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্যবসায়ীক অংশিদার ফজলুল হক বাবু।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ঝালকাঠির নুর সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ছালেক শরীফ বর্তমান অবৈধ দখলদার মেসার্স রূপালী ভান্ডারের মালিক মোঃ ফজলুল হক হাওলাদারকে অবৈধ আয়োডিন সরবরাহ সহ গোপনে নিবন্ধন দেয়ার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ঝালকাঠির বিসিক উপ-ব্যবস্থাপক বরাবরে দেয়া একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার কার্যালয়ে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় আলোচনায় বসার জন্য পত্র প্রেরণ করেন। সে অনুযায়ী ছালেক শরীফ ও তার পুত্র জামাল শরীফকে নিয়ে বিসিক কার্যালয়ে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ উপস্থিত হলে ফজলুল হক হাওলদার, তার পুত্র রিয়াজুল ইসলাম সোনা, কর্মচারী মনিরসহ ২/৩ জন লোক উপস্থিত হয়। সেখানে আলোচনায় মালিকানা বিরোধ নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নুর সল্ট বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়। ফজলুল হক হাওলাদার এ বিষয়ে ১ সপ্তাহের সময়ের আবেদন করলে সে অনুযায়ী বিসিক উপব্যবস্থাপক সময় দেন। এরপর অফিস থেকে বের হওয়া মাত্রই রূপালী ভান্ডারের হিসাব রক্ষক মনির হোসেন আকস্মিক সালেক শরীফকে ধাক্কা দিলে তার পুত্র জামাল শরীফ এর প্রতিবাদ জানায়। এতে উত্তেজিত ফজলুল হক, তার পুত্র সোনা ও মনির আমাদের দুজনের উপর হামলা চালিয়ে জামাল শরীফ, বাহাদুর, আসলাম, উজ্জল, আলভীকে বেধরক মারধরে আহত করে। জামালকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে কর্তব্যরত ডাক্তার বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করে।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, সংর্ঘের ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এএম/এলপিবি/আগস্ট ১৯, ২০১৫)