ফজলুল বারী: ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগের দিন পূর্ব নির্ধারিত এপোয়েন্টমেন্ট অনুসারে প্রবীর শিকদারকে নিয়ে আমি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যাই।

সাজেদা চৌধুরী সহ আরো অনেকে তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা তখন বিদেশে প্রবীর শিকদারের চিকিৎসার জন্যে একটি চেক দেন। টাকার অংকটা ১২ লাখ না ১৫ লাখ তা এই মূহুর্তে মনে পড়ছেনা। রাষ্ট্রের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ওই চেক হাতে পেয়ে প্রবীরকে নকল পা লাগাতে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সিঙ্গাপুর থেকে আসার পর প্রবীর দা'কে নিয়ে গেলাম জনকন্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক প্রিয় তোয়াব ভাইর কাছে। তোয়াব ভাইকে বলি, ফরিদপুরে যে রাজাকার মুসা বিন শমসের প্রবীর শিকদারকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল সে তাকে সেখানে আবার পেলে বাঁচিয়ে রাখবেনা। আপনি প্লিজ তার জন্যে জনকন্ঠের ঢাকা অফিসে একটা চাকরির ব্যবস্থা করুন। তোয়াব ভাই জনকন্ঠ সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদের সঙ্গে কথা বলে সেদিনই জনকন্ঠের মফ:স্বল ডেস্কে সেদিনই তাকে নিয়োগের ব্যবস্থা করেন। রাষ্ট্রের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেয়া সেই নকল পা নিয়েই একাত্তরের শহীদের সন্তান প্রবীর শিকদার আজ জেলখানায় গেলেন তারই বেয়াইর আক্রোশের শিকার হয়ে! প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া টিমের সদস্যদের অনুরোধ করছি একজনের সাংবাদিকের এ ধরনের হয়রানি স্বত্ত্বেও আপনারা চুপচাপ কেন তা বুঝতে পারি। অন্তত শেখ হাসিনার সম্মানে তার উপহার দেয়া নকল পা'টি ফরিদপুর জেলখানা থেকে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিন। শেখ হাসিনার উপহার কী এভাবে যেতে থাকতে পারে একটি জেলখানায়? রাজাকারদের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে একটি পা হারানো শহীদের সন্তান প্রবীর শিকদার এক পা নিয়েই সেখানে পড়ে থাকুক।

(ওএস/এলপিবি/আগস্ট ১৯, ২০১৫)